অশ্বগন্ধার ১৪টি কার্যকরি উপকারিতা ও অপকারিতা
অশ্বগন্ধার ১৪টি কার্যকরি উপকারিতা ও অপকারিতা। আপনি কি অশ্বগন্ধার উপকারিতা ও অপকারিতা এবং অশ্বগন্ধা কিভাবে খেতে হয়, অশ্বগন্ধা খেলে মোটা হওয়া যায় কিনা সেই সম্পর্কে জানতে চাচ্ছেন। তাহলে আজকের আর্টিকেলটি আপনার জন্য।
আজকের আর্টিকেলে আমরা অশ্বগন্ধার উপকারিতা এবং অপকারিতা নিয়ে আলোচনা করব। আপনি যদি অশ্বগন্ধার উপকারিতা ও অপকারিতা সম্পর্কে জেনে না থাকেন তাহলে এই আর্টিকেলটি শুরু থেকে শেষ পর্যন্ত ভালো করে পড়তে থাকুন।
পেজ সুচিপত্রঃ
- অশ্বগন্ধার উপকারিতা গুলো জানুুন
- ছেলেদের জন্য অশ্বগন্ধার উপকারিতা
- অশ্বগন্ধার অপকারিতা জেনে নিন।
- মেয়েদের জন্য অশ্বগন্ধার উপকারিতা
- অশ্বগন্ধা পাউডারের দাম কত জানুন
- অশ্বগন্ধা পাউডার খাওয়ার নিয়ম
- অশ্বগন্ধা খেলে মোটা হওয়া যায় কিনা জেনে নিন
- লেখকের শেষ কথা
অশ্বগন্ধার উপকারিতা গুলো জানুুন
অশ্বগন্ধার উপকারিতা। অশ্বগন্ধা একটি ভেষজ উদ্ভীদ এবং এর মধ্যে রয়েছে অনেক ঔষধি গুণাগুণ। অশ্বগন্ধার মূল, পাতা, ডাল এবং গাছের ছাল সবকিছূই ঔষধি গুণে ভরপুর। এই অশ্বগন্ধা বিভিন্ন রোগ নিরাময়ে কাজ করে। কিন্তু অশ্বগন্ধার ব্যবহার এবং খাওয়ার নিয়ম সম্পর্কে আমরা অনেকেই জানিনা যার কারণে আমরা উপকারিতাও বেশি পায়না। তাই অশ্বগন্ধা খাওয়ার আগে আপনাকে অবশ্যই অশ্বগন্ধার উপকারিতা ও
অপকারিতা এবং অশ্বগন্ধা খাওয়ার নিয়মগুলি জেনে নিতে হবে। তাহলে এর উপকারিতা আগের তুলনায় আশা করি বেশি পাবেন। অশ্বগন্ধার মূল শুকিয়ে গুড়া করে পাউডার করে খাওয়া যায়। অশ্বগ্ধার পাতা সেদ্ধ করে অথবা এর রস বের করে খেতে পারেন। এবং অশ্বগন্ধার ছাল তুলে বেটে এর রস খাওয়া যায় অথবা এর প্রলেপ কোনো ক্ষত, পোড়া বা শরীরে কোনো গোটা বের হলে সেই স্থানে লাগিয়ে দিলে দ্রুত ভালো হয়ে যায়া।
আরও পড়ুনঃ চাল কুমড়া খাাওয়ার ১৭টি গোপণ উপকারীতা ও অপকারীতা
তবে আপনার ক্ষেত্রে বলি আপনি যদি এখনও অশ্বগন্ধার উপকারিতা এবং অপকারিতা ও অশ্বগন্ধার ব্যবহার না জেনে থাকেন তাহলে এই আর্টিকেলটি ভালো করে একদম শুরু থেকে শেষ উব্দি পড়তে থাকুন। তাহলে আপনি অশ্বগন্ধার উপকারিতা এবং অপকারিতা ও এর ব্যবহার সম্পর্কে সঠিক তথ্য পেয়ে যাবেন আশা করি। এখন আমরা অশ্বগন্ধার মধ্যে কি কি উপকারিতা রয়েছে তা নিয়ে আলোচনা করব।
- রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়াতে অশ্বগন্ধার ব্যবহার
- ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রন করতে অশ্বগন্ধার কার্যকারিতা
- রক্তে কোলেস্টেরল কমাতে অশ্বগন্ধার ব্যবহার
- টেস্টোসটেরন হরমোন বাড়াতে অশ্বগন্ধা
- শরীরে মুক্ত রেডিকেল দুর করতে অশ্বগন্ধার সঠিক ব্যবহার
- চুলের সুসাস্থ্যে অশ্বগন্ধার উপকারিতা
- বিভিন্ন গাটের ব্যথা দুর করতে অশ্বগন্ধার ব্যবহার
- দৃষ্টি শক্তি বৃদ্ধি করতে অশ্বগন্ধার ব্যবহার
- মুখের ব্রণ ও মেসতা ভালো করতে
- চোখের নিচের কালো দাগ সারাতে অশ্বগন্ধার কার্যকারিতা
- ত্বকের শুষ্কভাব রোধে অশ্বগন্ধা
- অশ্বগন্ধা রক্তে শর্করার পরিমাণ কমায়
- অশ্বগন্ধা মন ভালো রাখে
- হার্ট অ্যাট্রাকের ঝুঁকি কমাতে অশ্বগন্ধার ব্যবহার
রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়াতে অশ্বগন্ধার ব্যবহারঃ প্রথমেই বলি রোগ প্রতিরোধের কথা। রোগ প্রতিটি মানুষের শরীরে আছে এবং এই পৃথিবীতে কেউ নীরোগী নয়। যেহেতু প্রতিটি মানুষের শরীরে রোগ রয়েছে তাই আমাদের উচিত শরীরে প্রথমে রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়ানো। কেননা যদি আপনার শরীরে রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা কমে যায় সে ক্ষেত্রে আপনার শরীরে বিভিন্ন ধরনের ছোট বড় সকল রোগে আক্রমণ করবে।
একটি ছোট রোগ যদি আপনার শরীরে বহুদিন যাবত থাকে তাহলে একপর্যায়ে সেই ছোট ছোট রোগ গুলি বড় বড় ধরনের রোগে পরিণত হবে যার ফলে আপনি মৃত্যুর সম্মুখীন হতে পারেন। তাই শরীরের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়াতে আমাদের উচিত নিয়মিত পুষ্টিবর্ধক খাবার খাওয়া। তবে রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়ানোর ক্ষেত্রে অশ্বগন্ধার কার্যকরিতা অনেক।
অশ্বগন্ধায় থাকে ভিটামিন এ, পটাশিয়াম, ফসফরাস, জিংক এবং এ্যান্টিঅক্সিডেন্ট উপাদান যা শরীরের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধির পাশাপাশি শরীরকে সুস্থ ও সবল রাখতে সাহায্য করে। অশ্বগন্ধার মূলের পাউডার দুধ বা হালকা গরম পানি সঙ্গে মিশিয়ে খেলে শরীরের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়ে।
ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রন করতে অশ্বগন্ধার কার্যকারিতাঃ ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণ করতে আমরা কি না করে থাকি আর কতই না ওষুধ খায় তবুও আমরা ডায়াবেটিস কন্ট্রোল এ আনতে পারি না। ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণে অশ্বগন্ধা খেতে পারেন। অশ্বগন্ধা রয়েছে এন্টি ডায়াবেটিস উপাদান যা শরীরে রক্তের সঙ্গে মিশে রক্তে শর্করার বা সুগারের পরিমাণ কমায় যার কারণে ডায়াবেটিস নামক সংক্রমকটি নিয়ন্ত্রণে থাকে।
রক্তে কোলেস্টেরল কমাতে অশ্বগন্ধার ব্যবহারঃ অশ্বগন্ধা রক্তে কোলেস্টেরলের মাত্রা কমায় এবং রক্তের হিমোগ্লোবিন ও লোহিত রক্তকণিকার মাত্রা বাড়িয়ে শরীরে পরিষ্কার রক্ত তৈরি করে। এবং রক্তের ময়লা গুলি পরিষ্কার করে দেয় যার ফলে রক্ত জমাট বাঁধে না রক্ত চলাচল সচল থাকে।
টেস্টোসটেরন হরমোন বাড়াতে অশ্বগন্ধাঃ ছেলেদের ক্ষেত্রে টেস্টোস্টেরন হরমোনের মাত্রা বাড়ানো অনেক জরুরী। টেস্টোস্টেরন হরমোন কমে গেলে যৌন ক্ষমতা কমে যায়। তাই যৌন ক্ষমতা বাড়ানোর ক্ষেত্রে অশ্বগন্ধার ব্যাপক কার্যকারিতা লক্ষ্য করা যায়। অশ্বগন্ধা মূলের গুড়া করা পাউডার প্রতিদিন এক চা চামচ পরিমাণ এক কাপ দুধের সঙ্গে অথবা হালকা গরম পানির সঙ্গে এক চামচ পরিমাণে মধু মিশিয়ে খেলে টেস্টোসটেরন হরমোন বৃদ্ধি পায় এবং যৌন ক্ষমতা দ্বিগুণ পরিমাণে বেড়ে যায়।
শরীরে মুক্ত রেডিকেল দুর করতে অশ্বগন্ধার সঠিক ব্যবহারঃ শরীরে মুক্ত রেডিকেল গুলো দূর করতে অশ্বগন্ধা খেতে পারেন। অশ্বগন্ধার মূল পাতা এবং ছাল সবগুলোই শরীরের জন্য অনেক উপকারি। আমাদের শরীরে বিপাক প্রতিক্রিয়া ঘটার হলে মুক্ত রেডিকেলগুলো তৈরি হয় এর ফলে বিভিন্ন ধরনের রোগ সৃষ্টি হতে পারে এমনকি মরণব্যাধী ক্যান্সারও হতে পারে। তবে আপনি যদি অশ্বগন্ধা অশ্বগন্ধা সঠিক নিয়মে খেতে পারেন তাহলে অশ্বগন্ধা আপনার শরীরে মুক্ত রেডিক্যাল এর বিরুদ্ধে লড়াই করবে
এবং কোন ধরনের ক্যান্সার কোষগুলি তৈরি হয়ে থাকলে সেগুলো ধ্বংস করে দিবে। তাই শরীরে মুক্ত রেডিকেল গুলো দূর করতে আপনি অশ্বগন্ধা খান। অশ্বগন্ধার পাউডার প্রতিদিন সকালে পানির সঙ্গে মিশিয়ে হালকা মধু দিয়ে খেতে পারেন দুধের সঙ্গে খেলে ভালো হয়। অথবা সুগন্ধার পাতার রস বের করে মধু সঙ্গে মিশিয়ে খেতে পারেন।
চুলের সুসাস্থ্যে অশ্বগন্ধার উপকারিতাঃ আমরা চুল পড়া কমাতে চুলের গোড়া মজবুত করতে চুল পাকা রোধ করতে চুল সিল্কি ও মজবুত করতে কত কিছুই না করে থাকি। এবং কত ধরনের শ্যাম্পু ব্যবহার করে থাকি। তবে যদি প্রাকৃতিক উপায়ে আপনি চুল সিল্কি মজবুত ও চুল পড়া কমাতে চান তাহলে অশ্বগন্ধা খেতে পারেন। একটি গবেষণা পাওয়া গিয়েছে যে অশ্বগন্ধা চুলের জন্য একটি টনিক হিসেবে কাজ করে।
অশ্বগন্ধায় অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট নামক উপাদান থাকার কারণে অশ্বগন্ধার পাতার রস চুলের গোড়ায় লাগালে অথবা খেলে চুল সুস্থ ও ভালো থাকে চুল সিল্কি ও মজবুত হয় ভেতর থেকে চুলের গোড়া শক্ত করে এবং চুল পাকা ও চুল পড়ার রোধ করে।
বিভিন্ন গাটের ব্যথা দুর করতে অশ্বগন্ধার ব্যবহারঃ আর্থ্রাইটিস্ট অর্থাৎ গাটের ব্যথা দূর করতে আমরা বিভিন্ন ধরনের ওষুধ সেবন করে থাকি এবং বিভিন্ন ধরনের মালিশ ব্যবহার করি। এরপরেও গাটের ব্যথা দূর করতে পারি না। অশ্বগন্ধা গাটের ব্যথা দূর করতে ভালো একটি ওষুধ হতে পারে। আপনার গাটের ব্যথা দূর করতে নিয়মিত অশ্বগন্ধা খান অশ্বগন্ধা গাটের ব্যাথা বিভিন্ন হাড়ের জয়েন্টের ব্যথা মাংসপেশীর ব্যথা দূর করতে সাহায্য করে। তাছাড়া অশ্বগন্ধা মানসিক চাপ কমাতেও সাহায্য করে।
দৃষ্টি শক্তি বৃদ্ধি করতে অশ্বগন্ধার ব্যবহারঃ চোখের দৃষ্টি শক্তি তোমার ক্ষেত্রে সাধারণত দুই ধরনের রোগ হয়ে থাকে যেমন-
- হাইপারমেট্রোপিয়া
- মাইওপ্রিয়া
মাইওপ্রিয়াঃ মাইওপিয়া অর্থাৎ ক্ষীণ দৃষ্টি। সাধারণত দূরের জিনিস কম দেখো এবং কাছের জিনিস বেশি দেখা।
এখন প্রায় শতকরা ৫০% মানুষের ক্ষেত্রে বেশিরভাগ শিশুদের ক্ষেত্রে মাইওপ্রিয়া নামক রোগটি বেড়ে চলেছে। এর কারণ হচ্ছে পুষ্টিবর্ধক এবং ভিটামিন যুক্ত খাদ্য কম খাওয়া এবং অতিরিক্ত পরিমাণে ইলেকট্রিক ডিভাইস যেমন মোবাইল ফোন কম্পিউটার ল্যাপটপ ইত্যাদি ব্যবহার করা। যার ফলে শরীরে ভিটামিন এ এর অভাব কমে যায়।
তাই শরীরে ভিটামিন এ এর অভাব বাড়াতে এবং চোখের দৃষ্টি শক্তি বাড়ানোর জন্য ও চোখের সকল রোগ ভালো করতে এই ধরনের ডিভাইসগুলি থেকে দূরে থাকতে হবে পাশাপাশি পুষ্টিবর্ধক খাবার খেতে হবে। এক্ষেত্রে আপনি পুষ্টিবর্ধক খাদ্য হিসেবে অশ্বগন্ধা খেতে পারে ভিটামিন এ থাকার কারণে আপনার চোখের দৃষ্টি শক্তি বেড়ে যাবে এবং চোখ সুস্থ ভালো থাকবে।
ত্বকের ব্রণ ও মেসতা ভালো করতেঃ অনেকের ক্ষেত্রে দেখা যায় ত্বকের উপরে বিভিন্ন ধরনের ব্রণ ও মেস্তা এ ধরনের সমস্যা হতে। আর এই সমস্যা গুলি দূর করতে আমরা কতই না ধরনের ক্রিম, নাইট জেল ব্যবহার করি এবং ঔষধও খেয়ে থাকি। আমরা যেগুলো ব্যবহার করি তার সবগুলোই হলো কেমিক্যাল। এইগুলো অনেক দিন যাবৎ ব্যবহারের ফলে ভালো হওয়ার পরিবর্তে চেহারার আরও করুণ দসা হয়ে যায়।
তাই আপনি যদি বিভিন্ন ক্রিম ব্যবহারের পরিবর্তে প্রাকৃতিক উপায়ে ব্রণ ও মেস্তা ভালো করতে চান তাহলে ভেষজ ঔষধ হিসেবে অশ্বগন্ধা ব্যবহার করতে পারেন। এর জন্য আপনাকে অশ্বগন্ধার ছাল বেটে পেষ্ট তৈরী করে যেই স্থানে ব্রণ ও মেস্তা আছে সেখানে লাগিয়ে রাখতে হবে এইভাবে কিছুদিন লাগালে দ্রুত ভালে হওয়ার সম্ভাবনা থাকে।
চোখের নিচের কালো দাগ সারাতে অশ্বগন্ধার কার্যকারিতাঃ আপনার যদি চোখের নিচে কালো দাগ দেখা দেয় এবং এই দাগ দুর করতে চান তাহলে অশ্বগন্ধা ব্যবহার করুন। অশ্বগন্ধার পাতা ভালো করে পরিষ্কার করে বেটে পেষ্ট তৈরী করে কালো দাগের উপর লাগালে কালো দাগ দুর হয়ে যায় এবং ত্বককে সুন্দর মসৃণ রাখে।
ত্বকের শুষ্কভাব রোধে অশ্বগন্ধাঃ ত্বক সৌন্দর্য বর্ধক আমরা কেবা না চাই। ত্বকের শুষ্কতা ও রুক্ষতা ভাব দুর করতে এবং ত্বককে ভেতর থেকে কমল ও নরম করতে এবং ত্বকের সৌন্দর্য বৃদ্ধি করতে অশ্বগন্ধা ব্যবহার করতে পারেন। একটি সমীক্ষায় দেখা গিয়েছে যে অশ্বগন্ধা ত্বকের জন্য খুব ভালো কাজ করে।
অশ্বগন্ধা রক্তে শর্করার পরিমাণ কমায়ঃ রক্তে শর্করার পরিমাণ কমাতে অশ্বগন্ধার উপকারিতা ব্যবপক লক্ষনীয়। যাদের রক্তে শর্করার পরিমাণ বেশি এবং ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণে আসেনা তাদের ক্ষেত্রে অশ্বগন্ধা একটি টনিক হিসেবে কাজ করে। অশ্বগন্ধার পাউডার বা ক্যাপসুল খেলে রক্তে শর্করার বা যাকে বলা হয় সুগার এই সুগারের মাত্রাটা কমিয়ে দেয় এবং ডায়াবেটিস হতে রক্ষা করে।
মন ভালো রাখতে অশ্বগন্ধার ব্যবহারঃ যাদের মেজাজ খিটখিটে এবং মোড সুইং অফ থাকে বা যাদের স্বরণশক্তি কম অল্পতেই কোনো কিছু ভুলে যাওয়ার মত সমস্যা যাদের আছে তারা অশ্বগন্ধা খেতে পারেন। এক্ষেত্রে অশ্বগন্ধাকে একটি এজেন্ট বল হয়। তাছাড়া অশ্বগন্ধা মাসসিক চাপ কমাতে এবং দীর্ঘদিন ধরে কঠোর পরিশ্রমের কারণে পেশির টান জনিত সমস্যা গুলো দুর করতে কার্যকরি ভূমিকা রাখে।
হার্ট অ্যাট্রাকের ঝুঁকি কমাতে অশ্বগন্ধার ব্যবহারঃ এখন প্রায় হার্ট অ্যাট্রাকের সমস্যা বহুলাংশে দেখা যায়। ঘন ঘন কয়েকবার হার্ট অ্যাট্রাক হলে মৃত্যুর ঝুঁকি থাকে। তবে এই হার্ট অ্যাট্রাকের মত মরণব্যাধী রোগ হতে বাঁচাতে পারে অশ্বগন্ধা। অশ্বগন্ধার পাউডার খেলে অথবা অশ্বগন্ধার পাতা সেদ্ধ করে খেলে হার্ট ভালো থাকে এবং হার্ট অ্যাট্রাকের ঝুঁকি কমে যায়। অশ্বগন্ধার পাতা সেদ্ধ করলে এক ধরনের ঘোড়ার মুত্রের মত গন্ধ বের হতে থাকে।
ছেলেদের জন্য অশ্বগন্ধার উপকারিতা
ছেলেদের জন্য অশ্বগন্ধার উপকারিতা বলতে গেলে অশ্বগন্ধা ছেলেদের জন্য একটি টনিক বলা যায়। অশ্বগন্ধার মধ্যে অনেক ঔষধি গুণ রয়েছে যা আমরা অনেক মানুষই জানিনা। অশ্বগন্ধা ছেলেদের যৌন ক্ষমতা বাড়াতে সাহায্য করে এবং শুক্রাণুর সংখ্যা বহু পরিমাণে বাড়িয়ে দেয়। ছেলেদের শরীরে এক ধরনের টেস্টেসটেরন হরমোন থাকে এই হরমোন যখন কমে যায় তখন যৌন ক্ষমতাও কমে যায়।
আর যৌন ক্ষমতা বাড়ানোর ক্ষেত্রে অশ্বগন্ধা বিশেষ ধরনের এক ঔষধ হিসেবে কাজ করে। বিজ্ঞানীদের মতে অশ্বগন্ধা ছেলেদের হরমোনকে বাড়াতে সাহায্য করে। তাছাড়া অশ্বগন্ধা ছেলেদের মানসিক চাপ কমায়, শরীরে শক্তি বৃদ্ধি করে, পেশির সংকোচন ও প্রসারণ করতে সাহায্য করে, দীর্ঘদিন ধরে কঠোর পরিমানে কাজ করার কারণে পেশিতে বিভিন্ন টানজিনিত সমস্যা দেখা দেয় এই সমস্যাও দুর করতে
সাহায্য করে অশ্বগন্ধা। তবে অশ্বগন্ধার উপকারিতা বুঝতে হলে আপনাকে অবশ্যই অশ্বগন্ধা খেতে হবে। তাহলে আপনি নিশ্চয় বুঝে যাবেন যে অশ্বগন্ধায় কি পরিমাণে উপকারিতা রয়েছে।
অশ্বগন্ধার অপকারিতা জেনে নিন।
এতক্ষন আমরা অশ্বগন্ধার উপকারিতা গুলো জানলাম এবার আমরা অশ্বগন্ধার অপকারিতা গুলো জানবো। দেখুন, আমাদের শরীরে সুসাস্থ্যে এবং শরীরকে ভালো রাখতে ও শরীরের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়াতে অশ্বগন্ধাকে ব্যাপক ঔষুধি গুণাগুণে ভরপুর একটি ভেষজ উদ্ভীদ বা ঔষুধি গাছ বলা যায়। তবে এটি ব্যবহার করার বা খাওয়ার আগে এর উপকারিতা এবং অপকারিতা গুলো আমাদের জেনে নিতে হবে। ইতিমধ্যে আমরা অশ্বগন্ধার উপকারিতা গুলো জেনেছি।
আরও পড়ুনঃ বেদানার ১৬টি উপকারীতা ও অপকারীতা-বেদানার বীজ খেলে কি হয় জানুন
এবার আমরা অশ্বগন্ধার অপকারিতা গুলো জেনে নিব। আসলে অশ্বগন্ধা যেহেতু ঔষুধি গুণে ভরপুর তাই অশ্বগন্ধার তেমন কোনো অপকারিতা নেই বললেই চলে। দীর্ঘদিন যাবৎ অতিরিক্ত পরিমাণে অশ্বগন্ধা সেবনের ফলে এক প্রকার বমি বমি ভাব, শরীরের রক্ত স্বাভাবিকের তুলনায় পাতলা হতে পারে, ডায়রিয়া হওয়ার আশংকা থাকে। তার পরেও যদি আপনার অতিরিক্ত সমস্যা হয় তাহলে কালবিলম্ব না করে অতিসত্বর ডাক্তারের স্বরনাপণ্য হন এবং ডাক্তারের পরামর্শ অনুযায়ী ঔষধ সেবন করুন।
মেয়েদের জন্য অশ্বগন্ধার উপকারিতা
মেয়েদের জন্য অশ্বগন্ধার উপকারিতাও ব্যাপক লক্ষনীয়। একটি বৈজ্ঞানীক পরিক্ষায় দেখা গিয়েছে যে অশ্বগন্ধা ছেলেদের যৌন ক্ষমতা বাড়ানোর পাশাপাশি মেয়েদেরও যৌন উত্তেজনা বাড়াতে সাহায্য করে। এবং মেয়েদের অশ্বগন্ধা সেবনের ফলে বা অশ্বগন্ধার তেল ব্যবহারে চুল পড়া চুল পাকা চুলকে শক্ত মজবুত ও সিল্কি করে এবং মুখের কালো মেস্তা ব্রণ চোখের নিচের কালো দাগভাব ও বয়সের ছাপ দুর করতে কার্যকরি ভূমিকা রাখে এই অশ্বগন্ধা। তবে দ্রুত উপকারিতা পাওয়ার জন্য অশ্বগন্ধার সঠিক ব্যবহার জানতে হবে।
অশ্বগন্ধা পাউডারের দাম কত জানুন
আমরা অনেকেই প্রশ্ন করে থাকি যে অশ্বগন্ধা পাউডারের দাম কত। অশ্বগন্ধা যেহেতু একটি ভেষজ ও মুল্যবান উদ্ভীদ এবং এটিকে সচারচার দেখা যায়না এবং অশ্বগন্ধার পাউডার সবাই তৈরী করতে পারেনা সেক্ষেত্রে অম্বগন্ধা পাউডারের একটু দাম বেশি হয়ে থাকে। সাধরণত অশ্বগন্ধা পাউডারের দাম ৪০০ থেকে ৭৫০ টাকার মধ্যে হয়ে থাকে। তবে আপনার পরিমান মত অথাৎ যেইটুকু আপনার প্রয়োজন সেটুকু কোনো ভেষজ ঔষুধের দোকানে ভালো মন্দ যাচাই বাচাই করে কিনে নিতে পারেন।
অশ্বগন্ধা পাউডার খাওয়ার নিয়ম
সাধারণত অশ্বগন্ধার আগা থেকে গোড়া পর্যন্ত সবকিছুই ঔষধ হিসেবে কাজ করে। অশ্বগন্ধার পাতা, কান্ড, ছাল এবং অশ্বগন্ধা ফল খাওয়া যায়। অশ্বগন্ধার প্রলেপ ব্যাথা স্থানে দিলে ব্যাথা কমে যায়। এবং অম্বগন্ধার পাউডারের মলম তৈরী করে ক্ষত, পোড়া ও কাটা স্থানে লাগালে দ্রুত ভালো হয়ে যায়। শরীরিক দূর্বলতা কাটানোর জন্য এক গ্লাস পরিমাণে দুধের সাথেে এক থেকে দেড় চামুচ পরিমাণ অশ্বগন্ধা পাউডার এবং এর সাথে এক চামুচ পরিমাণে মধু ভালো করে মিশিয়ে
প্রতিদিন রাতে ঘুমানোর আগে খেলে শারীরিক দূর্বলতা কেটে যাওয়ার পাশাপাশি টেস্টোসটেরন হরমোনও বাড়ে। যার ফলে যৌন ক্ষমতা ও শুক্রাণু সংখ্যা বৃদ্ধি পায়। অতএব এই উপকারিতাগুলো থেকে আপনি যদি বঞ্চিত না হতে চান সেক্ষেত্রে অশ্বগন্ধা আজ থেকেই খাওয়ার শুরু করুন। তবে পরিমাণ মত খাবেন অন্যথায় ক্ষতি হতে পারে।
অশ্বগন্ধা খেলে মোটা হওয়া যায় কিনা জেনে নিন
অশ্বগন্ধা খেলে মোটা হওয়া যায় কিনা। হ্যাঁ অশ্বগন্ধার ট্যাবলেট খেলে স্বাভাবিকের তুলনায় একটু মোটা হওয়া যায়। তবে আপনি অশ্বগন্ধা ট্যাবরেট খেয়ে মোটা হতে যাবেননা। কারণ, অশ্বগন্ধা ট্যাবলেট অনেক ধরনের কেমিক্যাল দিয়ে তৈরী করা হয়। তাই ট্যাবলেট খেয়ে মোটা না হয়ে আপনি প্রাকৃতিক ভাবে মোটা হতে পারেন। এর জন্য আপনি নিয়মিত পুষ্টিকর খাবার গ্রহণ করতে পারেন। অথবা
অশ্বগন্ধার পাউডার গুড়া করে দুধের সঙ্গে মিশিয়ে খেতে পারেন এতে আপনার ওজন বাড়তে পার। তবে মনে রাখবেন অশ্বগন্ধার পাউডার ওজন কমাতে সাহায্য করে।
লেখকের শেষ কথা
আমাদের এই আর্টিকেলে যতটুকু সম্ভব যাচাই বাচাই করে অশ্বগন্ধার উপকারিতা ও অপকারিতা এবং অশ্বগন্ধার সঠিক ব্যবহার ও খাওয়ার নিয়ম নিয়ে সঠিক তথ্য উপস্থাপন করেছি। আপনি যদি অশ্বগন্ধার উপকারিতা এবং অপকারিতা গুলো না জেনে থাকেন তাহলে আমাদের এই আর্টিকেলটি পড়ে জেনে নিতে পারবেন এবং উপকৃত হবেন আশা করি। তবে বিষয়গুলি বুঝতে হলে আর্টিকেলটি আপনাকে ভালো করে পড়তে হবে।
এই আর্টিকেলটি পড়ে যদি কোনো ধরনের ভুল পেয়ে থাকেন তাহলে ভুল মার্জনীয়। এবং এই আর্টিকেল বিষয়ে আপনার যদি কোনো প্রশ্ন থাকে তাহলে নিচের কমেন্ট বক্সে থেকে কমেন্ট করে জানাতে পারেন। এতক্ষন এই আর্টিকেলের সাথে থাকার জন্যে এবং আর্টিকেলটি ভালো পড়ার জন্য আপনাকে অসংখ্যা ধন্যবাদ। এই ধরনের আরও অনেক পোষ্ট পেতে নিয়মিত আমাদের এই ওয়েবসাইটটি ভিজিট করুন।
গ্রীনল্যান আইটির নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়
comment url