কাঁচা কলার ১২টি কার্যকরী উপকারিতা ও অপকারিতা
কাঁচা কলার ১২টি কার্যকরী উপকারীতা ও অপকারীতা। প্রিয় পাঠক আপনি কি কাঁচা কলার উপকারীতা ও অপকারীতা সম্পর্কে জানতে চান? তাহলে আপনি ঠিক জায়গাতেই এসেছেন। এবং এই আর্টিকেলটি আপনার জন্য। দেখুন, আমরা প্রায় বেশিরভাগ মানুষই কাঁচা কলা খেয়ে থাকি। কিন্তু, কাঁচা কলার উপকারীতা অপকারীতা সম্পর্কে অনেকেই অজানা। তাই কাঁচা কলার সম্পর্কে জানা আমাদের উচিৎ।
আজকের এই আর্টিকেলে আমরা কাঁচা কলার উপকারীতা ও অপকারীতা এবং কাঁচা কলাতে কি কি পুষ্টিগুণ নিহিত সেই সম্পৃক্ত বিষয়গুলো নিয়ে আলোচনা করা হবে। তবে আপনার যদি কাঁচা কলার উপকারীতা ও অপকারীতা সম্পর্কে জানা না থাকে তাহলে এই আর্টিকেলটি থেকে জেনে নিতে পারবেন।
পেজ সুচিপত্রঃ
- কাঁচা কলার ১২টি উপকারিতা জানুন
- কাঁচা কলার খাওয়ার অপকারীতা
- গর্ভাবস্থায় কাঁচা কলা খাওয়ার উপকারীতা
- গর্ভাবস্থায় কাঁচা কলা খাওয়ার অপকারীতা
- কাঁচা কলার পুষ্টিগুণ গুলো জেনে নিন
- শেষ কথা
কাঁচা কলার ১২টি উপকারিতা জানুন
সাধারণত কাঁচা কলা আমরা সবজি হিসেবে রান্না করে বা ভর্তা করে খেয়ে থাকি। কাঁচা কলার ভিতরে অনেক উপকারিতা রয়েছে। তবে কাঁচা কলার উপকারিতা পেতে হলে আপনার প্রতিদিনের খাদ্য তালিকায় অন্তত দুটি করে কাঁচা কলা রাখতে হবে। এই কাঁচা কলা ডায়রিয়ার জন্য একটি মহা ঔষধ। বিভিন্ন চিকিৎসকগণ ডায়রিয়ার ক্ষেত্রে কাঁচা কলা বেশি করে খাওয়া তাগিদ দিন। কারণ কাঁচা কলার ভিতরে এনজাইম থাকার ফলে এটি ডায়রিয়ার পক্ষে মারাত্মক কাজ করে। কাঁচা কলার মধ্যে যে সব উপকারিতা রয়েছে তার নিচে দেওয়া হল।
- রোগ প্রতিরোধে সাহায্য করে
- রক্তে শর্করার মাত্রা নিয়ন্ত্রণ করে
- রক্ত উৎপাদনে সহায়তা করে
- অতিরিক্ত রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণ করে
- দৃষ্টি শক্তি বৃদ্ধি করে
- ডায়রিয়া দূর করে
- ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণ করে
- হাড় শক্ত ও মজবুত করে
- হার্ট সুস্থ রাখে
- হৃদরোগের ঝুঁকি কমাতে সাহায্য করে
- আয়রনের ঘাটতি পূরণ করে
- পেটে বদহজমের সমস্যা দূর করে
রোগ প্রতিরোধে সাহায্য করেঃ দেহকে সুস্থ ও সবল রাখতে হলে প্রতিদিন নিয়মিত স্বাস্থ্যকর খাবার গ্রহণ করতে হবে। কারণ, যদি পর্যাপ্ত পরিমাণে পুষ্টিযুক্ত খাদ্য গ্রহণ করো না হয় তাহলে শরীরে ভিটামিনের ঘাটতি দেখা দেয়। যার ফলে শরীরের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা অনেকাংশই কমে যায়। এবং শরীর দুর্বল হয়ে পড়ে। তবে শরীরে ভিটামিনের ঘাটতি পূরণ করতে পারে কাঁচা কলা। কারণ কাঁচা কলায় প্রচুর পরিমাণে ভিটামিন এ, ভিটামিন বি৬, ভিটামিন সি, আয়রন, লৌহ, ক্যালসিয়াম, পটাশিয়াম, ফসফরাস, ফাইবার ও এন্টিঅক্সিডেন্ট এবং আরো উপাদান রয়েছে।
আরও পড়ুনঃ লালশাকের ১৫টি উপকারীতা ও অপকারীতা- গর্ভবস্থায় লালশাক খাওয়ার উপকারীতা
যেগুলো আমাদের শরীরের জন্য অত্যন্ত প্রয়োজন। আমাদের শরীরে যখন কোন একটি ভিটামিনের অভাব দেখা দেয়। তখন আমাদের শরীরের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা কমে যায়। যার ফলে আমরা বিভিন্ন রোগে জর্জরিত হয়ে যায়। তাই শরীরের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়ানোর জন্য প্রতিদিনের খাদ্য তালিকায় সবজি হিসেবে কাঁচা কলা রাখা উচিত এতে উপকারিতা অনেক পাওয়া যাবে আশা করা যায়।
রক্তে শর্করার মাত্রা নিয়ন্ত্রণ করেঃ আপনার রক্তে যদি শর্করার মাত্রা বেশি থাকে তাহলে নিয়মিত কাঁচা কলা খান। কাঁচা কলা রক্তে শর্করা মাত্র নিয়ন্ত্রণ করতে সাহায্য করে। কাঁচা কলায় প্রচুর পরিমাণে ফাইবার বা আঁশ জাতীয় উপাদান থাকার কারণে এটি রক্তের সঙ্গে মিশে রক্তে শর্করা বা গ্লুকোজের মাত্রা কমিয়ে দেয় ফলে ডায়াবেটিস হওয়ার আশঙ্কা কমে যায়।
রক্ত উৎপাদনে সহায়তা করেঃ রক্ত তৈরির ক্ষেত্রে কাঁচা কলা একটি কার্যকরী ভূমিকা পালন করে। কাঁচা কলায় রয়েছে আয়রন, লৌহ ও অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট যা রক্তে কোলেস্টেরলের মাত্রা কমিয়ে দেয়। এবং রক্তে হিমোগ্লোবিন ও লোহিত রক্তকণিকার মাত্রা বাড়িয়ে রক্ত তৈরি করতে সাহায্য করে। এবং রক্ত চলাচল সচল ও রক্ত পরিষ্কার থাকে।
অতিরিক্ত রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণ করেঃ যাদের শরীরে অতিরিক্ত রক্তচাপের মত সমস্যা আছে তারা নিয়মিত কাঁচা কলা খেতে পারেন। কারণ, কাঁচা কলা উচ্চ রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণে সহায়তা করে। পাশাপাশি নিম্ন রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণ করে থাকে।
দৃষ্টি শক্তি বৃদ্ধি করেঃ কাঁচা কলায় রয়েছে প্রচুর পরিমাণে ভিটামিন এ, ও ভিটামিন সি যা চোখের জ্যোতি বা দৃষ্টিশক্তি বাড়ানোর ক্ষেত্রে সহায়তা করে। তাই যদি আপনার চোখের কোন সমস্যা হয়ে থাকে বা দৃষ্টিশক্তি হ্রাস পেতে থাকে সেক্ষেত্রে নিয়মিত কাঁচা কলা রান্না করে খান। এতে আপনার শরীরের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধির পাশাপাশি চোখের দৃষ্টিশক্তি বাড়তে থাকবে।
ডায়রিয়া দূর করেঃ কাঁচা কলা ডায়রিয়ার ক্ষেত্রে একটি মহা ওষুধ। বিভিন্ন চিকিৎসকগণ ডায়রিয়ার ক্ষেত্রে বেশি বেশি করে কাঁচা কলা খাওয়ার তাগিদ দেন। কাঁচা কলাই রয়েছে এনজাইম যা ডায়রিয়ার বিরুদ্ধে লড়তে সাহায্য করে। এবং পেটের মধ্যে জমে থাকা বিভিন্ন ময়লা ও ব্যাকটেরিয়া বের করে দেয়। ফলে পেটের সমস্যা দূর হয়ে যায়। তাই ডায়রিয়ার মত ভয়ংকর রোগ দূর করতে কাঁচা কলা অনায়াসেই খেতে পারেন।
ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণ করেঃ ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণের ক্ষেত্রে সবুজ কাঁচা কলা সবজি হিসেবে রান্না করে খান এতে আপনার ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণে চলে আসবে। কারণ, কাঁচা কলায় এমন কিছু উপাদান ও এন্টিঅক্সিডেন্ট রয়েছে যা আপনার শরীরে রক্তের সঙ্গে মিশে রক্তে শর্করা বা চিনির পরিমাণ কমিয়ে দেয়। যা ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণ করতে সাহায্য করে।
হাড় শক্ত ও মজবুত করেঃ শরীরে যখন ক্যালসিয়ামের ঘাটতি হয়। তখন শরীরে বিভিন্ন অঙ্গ-প্রত্যঙ্গে এবং হাড়ের জয়েন্টে এক ধরনের ব্যথার সৃষ্টি হয় যা অনেকটা অসহ্যকর। এর একমাত্র কারণ হলো ক্যালসিয়ামের অভাব। ক্যালসিয়ামের অভাবে হাড় ক্ষয়ে যায়, এবং হাড় নরম ও বেঁকে যেতে পারে। তাই এই হাড়ের ক্ষয়জনিত সমস্যা ও হাড় শক্ত ও মজবুত করতে কাঁচা কলা খেতে পারেন। কাঁচা কলায় প্রচুর পরিমাণে ক্যালসিয়াম ও ভিটামিন বি সিক্স পাওয়া যায় যা হার শক্ত ও মজবুত করে এবং শরীরে ক্যালসিয়ামের ঘাটতি গুলো পূরণ করে দেয়।
ওজন কমায়ঃ আপনি যদি অতিরিক্ত ওজন জনিত সমস্যায় ভুগেন এবং দেহের ওজন কমাতে চান সে ক্ষেত্রে আপনার প্রতিদিনের খাদ্য তালিকায় কাঁচা কলা রেখে দিন। এই কাঁচা কলা আপনার শরীরের ওজন কমাতে সাহায্য করবে। অতিরিক্ত ওজন যেমন শরীরের পক্ষে ক্ষতিকর তেমন, এর ফলে বিভিন্ন ধরনের রোগ যেমন ডায়াবেটিস, উচ্চ রক্তচাপ, ও আরও বিভিন্ন ধরনের সমস্যা হতে পারে। আর কাঁচা কলা ফাইবার থাকার কারণে অনেকক্ষণ ধরে পেট ভরিয়ে রাখে এবং আপনার খাবার প্রবণতা কমিয়ে দেয়। যার কারণে ওজন কমে যায়।
হৃদরোগের ঝুঁকি কমাতে সাহায্য করেঃ হৃদরোগ অর্থাৎ হার্ট অ্যাটাকের ঝুঁকি কমানোর জন্য কাঁচা কলার উপকারিতা অপরিসীম। পাকা কলাতে যেমন প্রচুর পরিমাণে পটাশিয়াম থাকে। কাঁচা কলাতেও কিন্তু তার চাইতে কম নয়। কাঁচা কলাতেও প্রচুর পটাশিয়াম থাকে। একটি গবেষণায় দেখা গেছে যে একজন মানুষের প্রতিদিন ৪.৭০০ মিলিগ্রাম পটাশিয়াম গ্রহণের ফলে হৃদরোগের ঝুঁকি কমে। তাই হৃদরোগের ঝুঁকি কমানোর জন্য পটাশিয়ামযুক্ত খাবার হিসেবে কাঁচা কলা খেতে পারেন।
আয়রনের ঘাটতি পূরণ করেঃ যাদের শরীরে আয়রনের ঘাটতি রয়েছে তারা নিয়মিত কাঁচা কলা খান। এতে আপনার আয়রনের ঘাটতি পূরণ হয়ে যাবে। আয়রনের অভাব হলে শরীরের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা কমানোর পাশাপাশি রক্ত তৈরীর ক্ষমতা কমে যায় এবং রক্তে লোহিত রক্তকণিকা ও হিমোগ্লোবিনের মাত্রা কমে যেতে থাকে। তাই রক্ত উৎপাদনের ক্ষেত্রে আয়রন যুক্ত খাবার হিসেবে কাঁচা কলা হওয়ার অভ্যাস করুন।
পেটে বদহজমের সমস্যা দূর করেঃ কাঁচা কলা একটি আশ বা ফাইবার জাতীয় খাদ্য। আর কাঁচা কলাতে আঁশ থাকার কারণে এটি আপনার পেটের বিভিন্ন ময়লা ও ব্যাকটেরিয়া দূর করার পাশাপাশি হজম ক্ষমতা বাড়াতে সাহায্য করবে। তবে কাঁচা কলার কার্যকারীতা বেশি পেতে হলে কাঁচা কলা সিদ্ধ করে লবণ দিয়ে খেতে পারেন। এতে উপকারীতা বেশি পাওয়া যায়।
কাঁচা কলার খাওয়ার অপকারীতা
প্রতিটি জিনিসের যেমন উপকারীতা রয়েছে, তেমন তার মধ্যে অপকারীতাও বিদ্যামান রয়েছে। তাই আপনি যেই খাবারই খান না কেন? খাবার গ্রহণের আগে তার ভালো ও খারাপ উভয় দিক জেনে অথবা ডাক্তারের পরামর্শ অনুযায়ী খাবেন এতে উপকারীতা বেশি পাবেন। আমরা অনেকেই কাঁচা কলা খায়। কিন্তু কাঁচা কলার উপকারীতা গুলো জানলেও এর অপকারীতা সম্পর্কে জানিনা। ফলে আমরা এর উপকারীতাও বেশি পায়না। তাই উপকারীতা বেশি পেতে হলে এর অপকারীতা গুলোও জানতে হবে। তাহলে চলুন কাঁচা কলার অপকারীতা গুলো কি কি রয়েছে তা জেনে নিই।
- কাঁচা কলা যেহেতু ডায়রিয়া নিয়ন্ত্রনে কাজ করে, ফলে অতিরিক্ত পরিমানে কাঁচা কলা খেলে আপনার কোষ্টকাঠিন্য হতে পারে। তাই কাঁচা কলা নিয়ম অনুযায়ী খেতে হবে। অতিরিক্ত পরিমানে না খাওয়ায় ভালো।
- যাদের কাঁচা কলাতে এলার্জি রয়েছে তারা একদম কাঁচা কলা খাবেন না। এতে আপনার এলার্জির সমস্যা আরও বেড়ে যেতে পারে। পরবর্তীতে তা আপনার জন্য রড় ধরনের ক্ষতির কারণ হতে পারে। তাই এলার্জি রোধে কাঁচা কলা এড়িয়ে চলুন।
- মূলত কাঁচা কলা হজমের সমস্যা রোধ করে থাকে। তবে হজমের সমস্যা রোধ করলেও যদি আগে থেকেই আপনার হজমের সমস্যা থেকে থাকে তাহলে আপনার হজমের সমস্যা আরও বেড়ে যাবে। সেক্ষেত্রে আপনার কাঁচা কলা এড়িয়ে চলায় উচিৎ হবে।
- অতিরিক্ত পরিমানে কাঁচা কলা খাওয়ার ফলে আপনার ঘুম প্রয়োজনের তুলনায় আরও বেশি হতে পারে। কারণ, কাঁচা কলাতে এমন কিছু উপাদান আছে যা আপনার ঘুম আরও বাড়িয়ে দিবে। তাই অতিরিক্ত পরিমানে কাঁচা কলা খাওয়া পরিহার করুন।
তাছাড়া কাঁচা কলার তেমন কোনো ক্ষতিকর দিক নেই। শুধু মাত্র যাদের ক্ষেত্রে কাঁচা কলা খাওয়া নিষিদ্ধ তারা ব্যতিত সকলেই কাঁচা কলা খেতে পারবেন। তবে নিয়ম অনুযায়ী কাঁচা কলা খাবেন অন্যতায় ক্ষতির কারণ হতে পারে।
গর্ভাবস্থায় কাঁচা কলা খাওয়ার উপকারীতা
কাঁচা কলা যেহেতু প্রচুর ভিটামিন ও পুষ্টিতে ভরপুর এবং দামে সস্তা ও সহজলভ্য একটি খাবার। তাই কাঁচা কলার উপকারীতা পাওয়ার জন্য আমরা কাঁচা কলাকে সবজি হিসেবে রান্না করে খেয়ে থাকি। তবে প্রয়োজনের তুলনায় অতিরিক্ত পরিমাণে কাঁচা কলা খেলে এর উপকারের চেয়ে অপকার বা ক্ষতি বশি হয়। তাই আপনার শরীরে কেবলমাত্র যেইটুকু খাবার প্রয়োজন পড়ে শুধুমাত্র সেইটুকুই খাবেন। আর গর্ভাবস্থায় কাঁচা কলা খাওয়ার উপকারীতা আছে। কিন্তু, খুব বেশি পরিমানে খেলে উপকারের তুলনায় আরও বেশি ক্ষতি হতে পারে।
আরও পড়ুনঃ লাউশাকের ১৩টি কার্যকারি উপকারীতা ও অপকারীতা-গর্ভাবস্থায় লাউশাক খাওয়ার উপকারীতা
কারণ, কাঁচা কলায় প্রচুর ফাইবার, ভিটামিন সি, ভিটামিন বি৬, এবং পটাসিয়াম ও ফসফেট রয়েছে যা গর্ভবস্থায় অতিরিক্ত পরিমাণে খাওয়ার ফলে বদ হজম সেই সাথে পেট ফুলে যাওয়া ও গ্যাসট্রিকের সমস্যা হতে পারে। এবং ঘুমের পরিমান স্বভাবিকের তুলনায় আরও বেশি বেড়ে যাওয়ার আশংঙ্কা থাকে। আর গর্ভাবস্থায় যদি ঘুম বেশি হয় তাহলে মা ও সন্তানের শরীরের ওপর একটা ক্ষতিকর প্রভাব পড়তে পারে। তাই গর্ভাবস্থায় কাঁচা কলা খাওয়া যায়। কিন্তু খুব অল্প পরিমাণে খেতে হবে অথবা ডাক্তারের পরার্মশ অনুযায়ী কাঁচা কলা খান। এতে স্বাস্থ্য ভালো থাকবে এবং রোগ থেকে মুক্তি পাবেন।
গর্ভাবস্থায় কাঁচা কলা খাওয়ার অপকারীতা
গর্ভাবস্থায় কাঁচা কলা খাওয়ার উপকারীতা থাকলেও এর অপকারীতাই রয়েছে বেশি। এই সম্পর্কে উপরে আলোচনা করা হয়েছে আপনাদের সুবিধার্থে আমি আবারো বলছি। কাঁচা কলাই যেহেতু প্রচুর ফাইবার থাকে এবং এই ফাইবার অনেক সময় ধরে পেট ভরিয়ে রাখতে সাহায্য করে। তাই অতিরিক্ত পরিমাণে কাঁচা কলা খাওয়ার ফলে বদ হজমের সমস্যা হয় এবং পেট ফুলে যায়। ও আরও নানা ধরনের সমস্যার দেখা দেয়। তাই গর্ভাবস্থায় কাঁচা কলা না খাওয়ায় ভালো। আর যদি খাওয়ার ইচ্ছে হয় তাহলে খুব অল্প পরিমাণে খেতে হবে। গর্ভাবস্থায় কাঁচা কলা খাওয়ার অপকারীতা গুলো কি কি তা নিচে আলোচনা করা হলো।
- এলার্জিরজনিত সমস্যায়ঃ যদি আগে থেকেই এলার্জির সমস্যা থাকে। তাহলে কাঁচা কলা না খাওয়ায় ভালো হবে। কারণ, কাঁচা কলা খেলে আপনার এলার্জির সমস্যা আরও বেড়ে যেতে পারে। তাই কাঁচা কলা এড়িয়ে চলুন।
- ওজন বাড়েঃ কাঁচা কলাই ক্যালোরির পরিমাণ বেশি থাকায় এটি ওজন বাড়াতে সাহায্য করে। তাই গর্ভাবস্থায় কাঁচা কলা বেশি খেলে শরীরের ওজন হু হু করে বেড়ে যাবে। এবং অতিরিক্ত ওজন বাড়ার কারণে শরীরের জন্য বিভিন্ন রোগ সৃষ্টির পাশাপাশি একটা অস্বস্থিকর ভাব হতে পারে। সেক্ষেত্রে গর্ভাবস্থায় কাঁচা কলা এড়িয়ে চলায় সবথেকে ভালো হবে।
- হজমের ক্ষেত্রেঃ কাঁচা কলায় ফাইবার থাকে যা অনেক্ষণ ধরে ক্ষুধা নিবারণ করে রাখতে সাহায্য করে। আর কাঁচা কলায় ফাইবার থাকার কারণে যদি আগে থেকেই হজমের সমস্যা থেকে থাকে তাহলে হজমের সমস্যা আরও বেড়ে যাবে এবং পেট ফুলে যাবে। সেক্ষেত্রে এই ধরনের সমস্যায় আপনি যেন না পড়েন। তাই আগে থেকেই সতর্ক হওয়া ভালো।
কাঁচা কলার পুষ্টিগুণ গুলো জেনে নিন
কলা একটি এমনই ফল যা শিশু থেকে বৃদ্ধ পর্যন্ত সকলেই খেতে পছন্দ করে। কিন্তু কাঁচা কলা প্রায় অনেকেই খেতে অপছন্দ করে। তবে পাকা কলার মধ্যে যেমন ভিটামিন ও পুষ্টি থাকে অনুরূপভাবে কাঁচা কলার মধ্যেও প্রচুর পরিমাণে ভিটামিন ও পুষ্টিগুনে ভরপুর থাকে। তাই পাকা কলা খাওয়ার পাশাপাশি আমাদের সকলের উচিত কাঁচা কলা খাওয়া। কাঁচা কলা যেহেতু পাকা কলার মত চামড়া ছাড়িয়ে খাওয়া যায় না তাই এটি সবজি হিসেবে রান্না করে খেতে হয়। তবে কাচা কলা ভর্তা করেও খাওয়া যায়।
পাকা কলার পাশাপাশি কাঁচা কলাতেও প্রচুর পরিমাণে ভিটামিন ও পুষ্টিগুণ সমৃদ্ধ থাকে। কাঁচা কলাতে রয়েছে প্রচুর পরিমাণে ভিটামিন এ, ভিটামিন বি, ভিটামিন বি ৬, ভিটামিন সি, ক্যালসিয়াম, পটাশিয়াম, ফসফরাস, আয়রন,ফাইবার, অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট ইত্যাদি। তাছাড়া কাঁচা কলা প্রোটিনের একটি উৎস। কাঁচা কলা খাওয়ার ফলে শরীরের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতাটা বাড়িয়ে দেই। এবং শরীরের ওজন কমাতে সাহায্য করে। তাই কাঁচা কলার উপকারিতা পেতে হলে প্রতিদিনের খাদ্য তালিকায় কাঁচা কলা রাখা উচিত।
শেষ কথা
এই আর্টিকেলে আমরা কাঁচা কলার যাবতীয় গুণাগুণ ও কাঁচা কলার মধ্যে কোনো ক্ষতিকর দিক আছে কিনা এবং গর্ভাবস্থায় কাঁচা কলা খাওয়ার উপকারীতা ও অপকারীতা নিয়ে আলোচনা করেছি। কাঁচা কলায় উপকারীতা বেশি পাওয়া যায় তবে নিয়ম অনুযায়ী ও পরিমাণ মত খেতে হবে। আর কাঁচা কলার উপকারীতা ও অপকারীতা সম্পর্কে যদি আপনি জেনে না থাকেন তাহলে এই আর্টিকেল থেকে জেনে নিতে পারবেন। তবে আর্টিকেলাট আপনাকে ভালো করে পড়তে হবে।
এই আর্টিকেল বিষয়ে আপনার যদি কোনো প্রশ্ন থাকে তাহলে নিচের কমেন্ট বক্সে গিয়ে কমেন্ট করে জানাতে পারেন। আমরা আপনার মুল্যবান কমেন্টের উত্তর দিতে আগ্রহী থাকব। এই ধরনের আরও আর্টিকেল পেতে আমাদের এই ওয়েবসাইটটি নিয়মিত ভিজিট করুন। এতক্ষণ এই আর্টিকেলটি ভালো করে পড়ার জন্য এবং আর্টিকেলের সাথে থাকার জন্য আপনাকে ধন্যবাদ।
গ্রীনল্যান আইটির নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়
comment url