জয়তুন তেলের ৭টি বিশেষ উপকারিতা ও ব্যবহারের নিয়ম

জয়তুন তেলের নানাবিধ স্বাস্থ্য উপকারিতা রয়েছে তা আমরা জানলেও এর কিছু গোপণ উপকারিতা সম্পর্কে আমরা অনেকেই জানিনা। তবে আপনি যদি উপকারিতাগুলো এবং এর ব্যবহারবিধি জানতে চান তাহলে আজকের আর্টিকেলটি আপনার জন্য।

জয়তুন-তেলের-উপকারিতা

আজকের আর্টিকেলে আমরা জয়তুন তেলের ৭টি অবাক করা স্বাস্থ্য উপকারিতা নিয়ে আলোচনা করব। যা আপনি জানলে অবাক হয়ে যাবেন। তাই জয়তুন তেল এবং ফলের বিশেষ এই উপকারিতাগুলো জানতে আমাদের এই আর্টিকেলটি ভালোভাবে পড়তে থাকুন।

পেজ সুচিপত্রঃজয়তুন তেলের উপকারিতা

জয়তুন তেলের উপকারিতা

জয়তুন তেলের উপকারিতা সম্পর্কে জানার আগে সর্বপ্রথমে আপনার জানা উচিৎ জয়তুন কি? এই বিষয়ে অনেকেরই অনেক মন্তব্য বা মতভেদ রয়েছে। অনেকে জলপাইকে জয়তুন বলে আবার কারো কারো মতে জলপাই এবং জয়তুন আলাদা আলাদা দুইটি ফল। তবে এই ক্ষেত্রে আমি আমার যথেষ্ট থাকা অভিজ্ঞতা থেকে বলি বাংলা ভাষায় আমরা

যাকে জলপাই নামে চিনি আরবিতে তাকে জয়তুন এবং ইংরেজিতে অলিভ নামে ডাকা হয়। এর থেকে নিঃসৃত তেলকে Olive Oil তেল বলা হয়। বাজার থেকে আমরা অলিভ অয়েল (Olive Oil) নামে যে তেল কিনে থাকি তা জয়তুনের থেকে তৈরী। আল কুরআনে দুইটি ফলের কথা বিশেষভাবে উল্লেখ করা হয়েছে একটি হল ত্বীন ফল এবং অপরটি হলো জয়তুন।

আরও পড়ুনঃঅশ্বগন্ধার ১৪ টি কার্যকরি উপকারিতা ও অপকারিতা

জয়তুনের থেকে তৈরী তেল এবং জয়তুন অর্থাৎ জলপাই খাওয়ার নানাবিধ স্বাস্থ্য উপকারিতা রয়েছে যদিও বা আমরা তা অনেকেই জানি। তবে আমি জয়তুন তেলের বিশেষ ৭টি উপকারিতা নিয়ে আলোচনা করব যা আপনি জানলে অবাক হবেন। তবে চলুন সেই ৭টি বিশেষ উপকারিতাগুলো কি কি তা জেনে নেওয়া যাক।

কানের সমস্যা রোধে জয়তুৃনের তেলঃঅনেকের দেখা যায় ঘন ঘন কান গলা, কান পঁচা, পুকুরে গোসলের সময় কানের মধ্যে পানি ঢুকে যাওয়া এবং সবসময় কানের মধ্যে অনেক ময়লা জমে থাকা। এই রোগগুলো বিশেষ করে ছোট বাচ্চাদের ক্ষেত্রে বেশি লক্ষনীয়। তবে এই সমস্যাগুলো দুর করতে যদি জয়তুনের তেল অর্থাৎ(Olive Oil) তেল

২-৩ ফোটা মাত্র কয়েকদিন ব্যবহার করা যায় তাহলে এই ধরনের সমস্যাগুলো দ্রুত ভালো হয়ে যায়। এমনকি কানের মধ্যে অলিভ অয়েল তেল নিয়মিত ব্যবহারের ফলে কানে কম শোনা রোগ ভালো হয়ে যায় এবং কান পরিষ্কার থাকে।

ব্যথা দুর করতে জয়তুনের তেলঃশরীরের ব্যথা দুর করতে অলিভ অয়েল তেলের গুণাগুণ অপরিসীম। শরীরে ব্যথা হলে অলিভ অয়েল তেল হালকা গরম করে ব্যথাযুক্ত স্থানে মালিশ করে দিলে দ্রুত ব্যথা নিরাময় হয়ে যায়। আবার অনেকের অল্প বয়সে শরীরের চামড়া জড় হয়ে যায় এবং চোখের নিচে সার্কেলের মত কালো দাগ পড়ে সেক্ষেত্রে যদি

অলিভ অয়েল তেল নিয়মিত সর্বাঙ্গে ব্যবহার করা যায় তাহলে শরীরের চামড়া টান টান ও ময়েশ্চারাইজার হওয়ার পাশাপাশি চোখের নিচের কালো দাগ দুর হয়ে যায় এবং ত্বককে ভেতর থেকে কোমল নরম ও ফর্সা করে তোলে। এবং চোখের দৃষ্টিশক্তি বাড়াতেও সাহায্য করে। তাছাড়া জয়তুনের তেল ব্যবহারে শরীরের হাড় শক্ত ও মজবুত হয়

মেদ কমাতে সাহায্য করেঃজয়তুন বা অলিভ অয়েল তেলে ফ্যাটের পরিমাণ কম থাকে যা পেটের মধ্যে অতিরিক্ত চর্বি জমতে দেয় না। বরং পেটের মধ্যে জমে থাকা চর্বি দুর করে দিয়ে মেদ কমাতে সাহায্য করে। আর অতিরিক্ত মেদের কারণে আপনাকে বিভিন্ন সমস্যার সম্মুখীন হতে হবে

যেমন ওঠা-বসা, হাঁটা-চলা, এমনকি খাওয়া-দাওয়ার ব্যপারে অনেক সতর্কতা মেনে চলতে হতে পারে। তাই এর ধরনের বিপদ থেকে বাঁচতে এবং মেদ কমাতে নিয়মিত Olive Oil তেল খেতে পারেন। জয়তুনের তেল ওজন কমাতে সাহায্য করে।

ক্যান্সারকোষ ধ্বংস করেঃজয়তুনের তেলে এক বিশেষ ধরনের অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট এবং স্কোয়ালেন ও টেরপেনয়েড নামক দুটি বিশেষ উপাদান একত্রে মিশে শরীরের মধ্যে কোনায় কোনায় উৎপন্ন হওয়া ভয়ঙ্কর ক্যান্সার নামক ভাইরাস কোষগুলোর বিরুদ্ধে লড়াই করে ধ্বংস করে দেয় এতে অন্যন্ন ক্যান্সার হওয়ার সম্ভাবনা অনেকাংশেই কমে যায়। ফলে শরীর সুস্থ্য ও স্বাভাবিক থাকে।

মাথায় নতুন চুল ও দাঁড়ি গজাতে সাহায্য করেঃঅনেকের মাথার চুল ঝরতে ঝরতে মাথায় টাক পড়ে যায়। এর কারণ হল চুলের গোড়ায় ভিটামিন ই, এবং পুষ্টির অভাব রয়েছে। ভিটামিন ই, এর অভাবে মাথার চুল পড়ে যায়। আর অলিভ অয়েল তেলে প্রচুর ভিটামিন ই, থাকায় এই তেল বেশ কিছুদিন যাবৎ নিয়মিতভাবে চুলের গোড়ায় এবং পুরো মাথায় মাখলে আপনার যেমন

টাক পড়া স্থানে নতুন চুল গজিয়ে টাক পড়া বন্ধ হবে তেমনিভাবে চুলের গোড়ায় পুষ্টির যোগান দিবে এবং চুল শক্ত ও মজবুত হওয়ার পাশাপাশি চুল মসৃণ ও সিল্কি দেখাবে। এবং দাঁড়ির গোড়ায় জয়তুনের তেল লাগালে নতুন দাড়ি বের হয়। আবার অনেকের ক্ষেত্রে অল্প বয়সেই মাথার চুল এবং মুখের দাড়ি পেকে যায় এর কারণ হল

হরমোন নিঃস্বরণে ব্যঘাত ঘটা। মাথার ওপর দিয়ে এবং পাঁয়ের টাখনু দিয়ে এক ধরনের হরমোন নিঃস্বারিত হয়। যদি এই বিশেষ হরমোন নিঃস্বরণে বাঁধাপ্রাপ্ত হয় তাহলে খুব অল্প বয়স থেকেই মাথার চুল ও দাঁড়ি পাঁকতে শুরু করে চোঁখের দৃষ্টি কমে যায় এবং যৌন ক্ষমতাও কমে যায়। তাই লক্ষ রাখবেন হরমোন নিঃস্বরণে যেন কোনো সময় ব্যাঘাত না ঘটে

সেজন্য আপনাকে পাঁয়ের টাখনু ও মাথা সমসময় খোলা রাখতে হবে। আর জয়তুনের তেল চুল ও দাঁড়িতে মাখলে চুল ও দাঁড়ি পাঁকবেনা। বিশেষভাবে পরিক্ষীত যে, জয়তুনের তেল ব্যবহারের ফলে বার্ধক্যকাল পর্যন্তও চুল দাঁড়ি কালো থাকবে কোনো কখনই সাদা হবেনা।

হৃদযন্ত্র ভালো রাখেঃহৃদযন্ত্র অর্থাৎ হার্ট শরীরের একটি মুল্যবান অংশ এটি যদি মাত্র কয়েক মিনিটের জন্য বন্ধ হয়ে যায় তাহলে সঙ্গে সঙ্গে হার্ট ব্লক হয়ে যাবে তাতে মৃত্যুর ঝুঁকি খুব বেশি। তবে হার্ট ভালো রাখতে এবং হার্টের সকল কার্যক্রম ঠিক রাখতে আগে রক্ত চলাচল ঠিক থাকা প্রয়োজন। অনেক খাবারের সাথে ক্ষতিকর ফ্যাট গ্রহণের ফলে হার্ট

আরও পড়ুনঃচাল কুমড়া খাওয়ার ১৭ টি গোপন উপকারিতা ও অপকারিতা

স্বাভাবিকভাবে কাজ করা বন্ধ হয়ে যায়। তবে এই প্রয়োজনগুলো অলিভ অয়েল তেল খাবারের মাধ্যমে পুরোন করা যায়। অলিভ অয়েল তেলে এমন কিছু উপাদান রয়েছে যা আপনার শরীরে রক্তের মধ্যে এলডিএল (LDL) কোলেস্টেরলের মাত্রা কমিয়ে দিয়ে রক্তে হিমোগ্লোবিনের মাত্রা বাড়িয়ে শরীরে রক্ত তৈরী করে এবং রক্ত চলাচল স্বাভাবিক থাকে ফলে হার্টও ভালো থাকে।

ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণে রাখেঃশরীরকে সুস্থ্য ও স্বাভাবিক রাখার জন্য যেটা সবচেয়ে বেশি প্রয়োজন পড়ে তা হল শরীরের রোগপ্রতিরোধ ক্ষমতা। কারণ, শরীরের যদি রোগপ্রতিরোধ ক্ষমতা না থাকে বা কমে যায় তাহলে শরীর অসুস্থ্য হবে এবং বিভিন্ন রোগ দ্বারা আক্রান্ত হবে এটাই স্বাভাবিক।

তবে রোগপ্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়াতে অলিভ অয়েল তেল গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। এবং অলিভ অয়েল তেলে ফ্যাট ও শর্করার পরিমাণ কম থাকায় ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণ করে। তাই নিঃস্বন্দেহে অলিভ অয়েল তেল খেতে পারেন।

জয়তুন তেল ব্যবহারের নিয়ম

জয়তুন তেলের উপকারিতা নিয়ে এতক্ষণ আমরা আলোচনা করলাম এবার আমরা জয়তুন তেল কিভাবে ব্যবহার করতে হয় তা নিয়ে আলোচনা করব। কিভাবে জয়তুন তেল ব্যবহার করতে হয় জয়তুন তেল আদৌ খাওয়া যায় কিনা তা আমরা অনেকেই জানিনা। আর না জানার কারণে আমরা জয়তুন তেলের উপকারিতাও তেমন পাইনা।

আরও পড়ুনঃকলার মোচার ১৬ টি গোপণ উপকারিতা ও অপকারিতা

তাই জয়তুন তেলের সঠিক ব্যবহার আমাদের সকলেরই জানা উচিৎ। চলুন এবার জয়তুন তেল কিভাবে ব্যবহার করতে হয় তা জেনে নিই।

জয়তুন-তেল-ব্যবহারের-নিয়ম

সকল রান্নার ক্ষেত্রেঃঅন্যন্ন সকল তেলের তুলনায় জয়তুনের তেলে পুষ্টির পরিমাণ বেশি থাকে এবং এই তেল স্বাস্থ্যসম্মত। তাই জয়তুনের তেল দিয়ে রান্না করা তরকারি বা অন্যন্ন খাবার খেতে অনেক সুস্বাদু লাগে। তবে স্বাস্থ্যসম্মত বলেইযে অতিরিক্ত পরিমাণে খাবেন তা নয় বরং পরিমাণ মত খেতে হবে।

মালিশের ক্ষেত্রেঃআমরা অন্যন্ন তেল শরীরে যেভাবে মালিশ করি ঠিক অনুরূপভাবে জয়তুনের তেলও মালিশ করতে হবে। আর ব্যথাযুক্ত স্থানে হালকা পরিমাণে গরম করে নিয়ে আস্তে আস্তে মালিশ করতে হবে। এতে ব্যথা উপশম হয়ে যাবে ইনশা-আল্লাহ।

চুলে ব্যবহারের ক্ষেত্রেঃচুলে ব্যবহারের জন্য প্রথমে বাম হাতের তালুতে জয়তুনের তেল ঢেলে নিতে হবে এবং ডান হাতের পাঁচ আঙ্গুলের মাথায় তেল লাগিয়ে নিয়ে চুলের গোড়ায় ভালোভাবে লাগাতে হবে যেন প্রতিটি চুলের গোড়ায় তেল পৌছে যায়। একই পদ্ধতিতে দাঁড়িতেও লাগাতে হবে। এতে চুলের গোড়ায় গোড়ায় পুষ্টির যোগান পাবে এবং চুল শক্তিশালি ও মজবুত হবে।

জয়তুন ফল খাওয়ার উপকারিতা

আমরা জয়তুনের তেলের উপকারিতা, ব্যবহারবিধি ও দাম জানতে পারলাম। এবার আমরা জয়তুন ফল খাওয়ার কি কি উপকারিতা রয়েছে তা জানবো। আসলে জয়তুন ফল বলতে জলপাইকে বোঝায়। জলপাইয়ের থেকে বের হওয়া তেল অর্থাৎ অলিভ অয়েল তেল খাওয়ার যেমন নানাবিধ স্বাস্থ্য উপকারিতা পাওয়া যায় তেমন গোটা জলপাই খাওয়ারও

অধিক পরিমাণে উপকারিতা পাওয়া যায়। জলপাই কাঁচা অথবা পাঁকা যেকোনো অবস্থাতেই খাওয়া যায়। এবং জলপাইয়ের আচার তেরী করে খেতে অনেক সুস্বাদু লাগে। জলপাইয়ের উপকারিতাগুলো কি কি তা নিচে দেওয়া হল।

হজম প্রক্রিয়া ব্যহত রাখেঃনিয়মিত জলপাই খেলে হজম ক্ষমতা বৃদ্ধি পাই। এতে থাকা অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট শরীরের  রোগপ্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়ানোর পাশাপাশি পেটের হজম প্রক্রিয়াকে বাড়াতে বিশেষভাবে সাহায্য করে এবং কোষ্ঠকাঠিণ্য দুর করে।

লম্বা হতে সাহায্য করেঃজলপাইয়ে প্রচুর পরিমাণে ফাইবার থাকে যা শারীরিক গঠণ ঠিক রাখে এবং হাড়কে মোটা শক্ত ও চওড়া করে। জলপাইয়ে থাকা ফাইবার লম্বা হতে ব্যাপকভবে সাহায্য করে।

এলার্জি দুর করেঃএতে রয়েছে প্রচুর পরিমাণে ভিটামিন সি, ভিটামিন এ, অ্যান্টিমাইক্রোবিয়াল, অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট যা শরীরের মধ্যে প্রবেশ করে অনেকদিন ধরে তৈরী হওয়া এলার্জি যেমন রক্তের এলার্জি, পায়ের এলার্জি, চোঁখের এলার্জি সহ আরও যেই ধরনের এলার্জিগুলো রয়েছে তার বিরুদ্ধে লড়াই করে এলার্জি দুর করে দেয়।

মুখের রুচি বাড়াতে সাহায্য করেঃজলপাই যেহেতু টক মিষ্টি স্বাদযুক্ত একটি ফল তাই এই ফল খেতে অনেক সুস্বাদু হয় এবং মুখের রুচি বাড়াতে সাহায্য করে। বিশেষ করে শরীরে যখন জ্বর হয় তখন জ্বরের কারণে মুখের স্বাদ চলে যায় কোনো খাবারই খেতে ভালো লাগেনা সেই সময় জলপাই খেলে মুখের স্বাদ এবং খাবারের প্রতি রুচি দ্রুত চলে আসে।


এছাড়াও জয়তুন ফল অর্থাৎ জলপাইয়ের আরও নানাবিধ স্বাস্থ্য উপকারিতা রয়েছে যা আলোচনা করে শেষ করা যাবেনা। মহাগ্রন্থ্য আর কুরআনে জয়তুন ফলের কথা উল্লেক করা হয়েছে বলা হয়েছে তোমরা জয়তুন ফল খাওয়া এবং জয়তুনের তেল শরীরে মালিশ কর এতে শরীর সুস্থ্য ও স্বাভাবিক থাকবে এবং

তেল মালিশ করার দরুন শরীরের চামড়া জড় হবেনা অকালে মাথার চুল ও দাঁড়ি পাঁকবেনা এবং অকাল বার্ধক্যও ঘটবেনা। এটা আমাদের প্রিয় নবী হযরত মুহাম্মদ (সঃ) থেকে পরিক্ষীত এতে কোনো স্বন্দেহ নেই।

জলপাইয়ের আচার তৈরীর পদ্ধতি

জলপাইয়ের আচার তৈরীর পদ্ধতি আজকাল গ্রাম অঞ্চলের মা বোনেরা জানলেও শহরের মানুষেরা কিন্তু খুব কমই জানে। কারণ, গ্রামের তুলনায় শহরের মা বোনেদের আচার তৈরীর প্রক্রিয়া সম্পর্কে তাদের জ্ঞান খুব কমই থাকে। তাই আজকে আমি আপনার সামনে উদাহরণস্বরূপ এক কেজি জলপাইয়ের আচার কিভাবে তৈরি করতে হয় সেই পদ্ধতি সম্পর্কে আলোচনা করব আশা করি আপনি বুঝতে পারবেন।
জলপাইয়ের-আচার-তৈরীর-পদ্ধতি
  • প্রথমে এক কেজি পরিমাণ জলপাই নিয়ে বোঠা ছাড়িয়ে পরিষ্কার পানিতে ভালো করে ধুয়ে নিন এবং চুলার উপরে একটি পাত্র দিয়ে পাত্রে পানি দিয়ে জলপাইগুলো সেদ্ধ করে নিন।
  • এরপর সিদ্ধ করা জলপাইগুলো অন্য একটি পাত্রে তুলে রাখুন। এবং শুকনো জিরা খোলায় ভেজে গুড়া করে রেখে দিন
  • এরপর একটি পাত্র চুলার উপরে বসিয়ে ২০০ গ্রাম পেঁয়াজ বাটা,১০০ গ্রাম রসুন বাটা, ৫০ গ্রাম আদা বাটা, পরিমাণ মত মরিচের গুঁড়া, হলুদের গুড়া, ধনিয়া গুড়া, পাঁচ মসলা গুড়া, আধা কেজি পরিমাণ গুড়, আধা লিটার পানি, দিয়ে নাড়তে থাকুন। এরপরও যদি আরো পানি লাগে তাহলে দিতে হবে। দেখবেন মসলা গুলো যখন ফুটে আসবে তখন সেদ্ধ জলপাইগুলো মসলার উপরে ছেড়ে দিন এবং নাড়তে থাকুন।
  • নাড়তে নাড়তে যখন মসলাগুলো জলপাইয়ের গায়ে লেগে যাবে তখন জলপাই গুলো নামিয়ে নিয়ে আলাদা একটি পাত্রে রেখে দিন।
  • এরপর জলপাইয়ের আচারের উপরে গুড়া করে রেখে দেওয়া সেই জিরা গুলো পরিমাণ মতো ছিটিয়ে দিন। জিরার গুড়া আচারে স্বাদ বাড়াতে সাহায্য করে।
  • যখন আচারগুলো ঠান্ডা হয়ে যাবে তখন একটি কাঁচের বয়োমে আচারগুলো ঢেলে খাঁটি সরিষার তেল দিয়ে ডুবিয়ে সংরক্ষণ করে রাখুন। পরীক্ষিত যে কাঁচের বয়োমে আচার রাখলে দীর্ঘদিন যাবত আচার ভালো থাকে নষ্ট হয় না। এবং যেকোনো আচারের ক্ষেত্রে খাঁটি সরিষার তেল আচারের স্বাদ বাড়াতে সাহায্য করে।
  • আর এভাবেই খুব সহজে তৈরি হয়ে গেল আপনার জলপাইয়ের আচার

জয়তুনের ডাল দিয়ে মেসওয়াক করার উপকারিতা

জয়তুনের ডাল দিয়ে মেসওয়াক করা ভালো তা আমরা জানলেও এর মধ্যে কিছু স্বাস্থ্য উপকারিতা রয়েছে তা আমরা অনেকেই জানিনা। জয়তুনের ডাল দিয়ে মেসওয়াক করতে প্রায় মানুষই পছন্দ করে। জয়তুন ডালের মেসওয়াকের গুরুত্ব ও ফজিলত রয়েছে অনেক। জয়তুনের ডাল দিয়ে মিসওয়াক করা সুন্নত কেননা, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি অসাল্লাম নিজেই


জয়তুনের ডাল দিয়ে মেসওয়াক করেছেন এবং সকলকেই করার তাগিদ দিয়েছেন। কারণ, অন্যন্ন গাছের ডাল দিয়ে মিসওয়াক করার তুলনায় জয়তুনের ডাল দিয়ে মেসওয়াক করলে অনেক স্বাস্থ্য উপকারিতা পাওয়া যায়। তবে কি কি স্বাস্থ্য উপকারিতা পাওয়া যায় তা নিচে দেওয়া হল।
  • জয়তুনের ডাল দিয়ে মেসওয়াক করলে দাঁতের স্বাস্থ্য ভালো থাকে দাঁত ঝকঝকে দেখায়। এবং অন্যান্য মেসওয়াক যেমন ব্রাশ দিয়ে অন্যান্য গাছের ডাল দিয়ে মেসওয়াক করলে দাঁত ক্ষয়ে যাওয়ার সম্ভাবনা বেশি থাকে কিন্তু জয়তুনের ডাল দিয়ে মেসওয়াক করলে দাঁত ক্ষয়ে যায় না দাঁত ভালো থাকে।
  • জয়তুন ডাল দিয়ে মেসওয়াক করার ফলে দাঁতের মাড়ি শক্ত হয়, দাঁতের গোড়া দিয়ে রক্ত পড়ে না, দাঁতের গোড়া ফুলে যায় না।
  • অনেকের ক্ষেত্রে লক্ষণীয় খুব অল্প বয়সে দাঁতে পোকা লেগে যায় এবং অকালে দাঁত পড়ে যায়। এর কারণ হচ্ছে দাঁতের যত্ন না নেওয়া এবং অধিক পরিমাণে মিষ্টি জাতীয় খাবার খাওয়া এবং মিষ্টি জাতীয় পেস্ট দিয়ে দাঁত মাজা যেমন পেপসোডেন্ট পাউডার, পেপসোডেন্ট পেস্ট, ক্লোজআপ, ইত্যাদি।
  • এগুলোতে এক ধরনের মিষ্টি জাতীয় কেমিক্যাল দেওয়া থাকে যার কারণে দাঁত মাজার সময় মিষ্টি মিষ্টি স্বাদ লাগে যা দাঁতের পক্ষে খুবই ক্ষতিকর। সেগুলো ব্যবহার না করে যদি জয়তুনের ডাল দিয়ে মেসওয়াক করা যায় তাহলে দাঁতে কোন ধরনের পোকা লাগবে না এবং অকালে দাঁতও পড়বে না দাঁতের গোড়া শক্ত ও মজবুত থাকবে।
  • আমাদের মধ্যে অনেক মানুষ আছে যাদের মুখ থেকে বিশ্রী দুর্গন্ধ হয় বের হয় সেই দুর্গন্ধ দূর করতে জয়তুনের ডাল এক কার্যকারী ভূমিকা পালন করে। জয়তুনের ডাল দিয়ে মেসওয়াক করলে মুখের দুর্গন্ধ দূর হয়। তাছাড়া জয়তুনের ডাল দিয়ে মেসওয়াক করা সুন্নত।

জয়তুনের তেলের দাম কত জেনে নিন

আমরা অনেকেই জয়তুন তেলের তাম নিয়ে চিন্তিত থাকি এবং জয়তুন তেল বা অলিভ অয়েল তেলের সঠিক দাম জানতে চাই। আসলে অন্যন্ন খাবার তেলের তুলনায় এই তেল অনেক স্বাস্থ্যকর ও পুষ্টিসমৃদ্ধ এবং এই তেলের দাম অন্যন্ন তেলের তুলনায় একটু বেশি হয়। জয়তুনের তেলের দাম নিচে দিয়ে দেওয়া হল আপনি আপনার প্রয়োজন মত দাম জেনে  নিকটস্থ মুদি দোকান থেকে সংগ্রহ করে নিতে পারেন।

নাম পরিমাণ দর
জয়তুন তেল ১০০ মিলি বর্তমান বাজারে ১৪০ টাকা
জয়তুন তেল ২০০ মিলি ২৬৫ টাকা
জয়তুন তেল ২৫০ মিলি ৩৩৫ টাকা
জয়তুন তেল ৫০০ মিলি ৬৫০ টাকা
জয়তুন তেল ১০০০ মিলি=(১ লিটার) ১২৫০ টাকা
জয়তুন তেল ২০০০ মিলি=(২ লিটার) ২৪০০ টাকা

শেষ কথাঃ জয়তুন তেলের উপকারিতা

জয়তুনের তেলের উপকারিতা, জয়তুন তেলের ব্যবহার জয়তুন ফল খাওয়ার উপকারিতা জয়তুনের ডাল দিয়ে মেসওয়াক করলে কি কি উপকারিতা পাওয়া যায়, এবং জয়তুন ফল অর্থাৎ জলপাইয়ের আচার তৈরির প্রক্রিয়া সম্পর্কে এই আর্টিকেলে আমরা সঠিক তথ্য যাচাই বাছাই করে বিস্তারিতভাবে আলোচনা করেছি। তবে জয়তুনের সকল উপকারিতা সম্পর্কে

আপনি যদি না জেনে থাকেন তাহলে এই আর্টিকেলটি থেকে জেনে নিতে পারবেন এবং কিছুটা হলেও উপকৃত হবেন আশা করি। এই আর্টিকেলটি ভালোভাবে পড়ার জন্য এবং আর্টিকেলের সঙ্গে থাকার জন্য আপনাকে অনেক অনেক ধন্যবাদ। এই ধরনের আরো সেবামূলক আর্টিকেল পেতে আমাদের এই ওয়েবসাইটটি সাবস্ক্রাইব করে নিয়মিত ভিজিট করতে থাকুন।

এই পোস্টটি পরিচিতদের সাথে শেয়ার করুন

পূর্বের পোস্ট দেখুন পরবর্তী পোস্ট দেখুন
এই পোস্টে এখনো কেউ মন্তব্য করে নি
মন্তব্য করতে এখানে ক্লিক করুন

গ্রীনল্যান আইটির নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়

comment url