কোষ্ঠকাঠিন্য দ্রুত নিরাময় করতে গুরুত্বপুর্ণ ৭টি খাবার

আপনি কি কোষ্ঠকাঠিন্য নিয়ে অনেক চিন্তিত আছেন ? কোষ্ঠকাঠিন্য আপনাকে কুরে কুরে খাচ্ছে। বিভিন্ন রকম ঔষধ খেয়েও কোষ্ঠকাঠিন্য ভালো হচ্ছে না। তাহলে আপনি একদম ঠিক জায়গাতেই এসেছেন এবং এই আর্টিকেলটি একমাত্র আপনার জন্য।

কোষ্ঠকাঠিন্য-দ্রুত-নিরাময়-করার-উপায়

আজকে আমি এই আর্টিকেলে কোষ্ঠকাঠিন্য দ্রুত নিরাময়ের জন্য এমন কিছু ঘরোয়া টিপস এবং ৭টি বিশেষ খাবারের কথা আপনার সাথে শেয়ার করব যা আপনার কোষ্ঠকাঠিন্য দুর করতে ব্যাপকভাবে সাহায্য করবে। তাহলে চলুন শেয়ার করা যাক

পোষ্ট সুচিপত্রঃ

কোষ্ঠকাঠিন্য দ্রুত নিরাময় করতে গুরুত্বপুর্ণ ৭টি খাবার

আজকাল অহরহ অনেকেরই কোষ্ঠকাঠিন্য রোগ হতে দেখা যাচ্ছে। কোষ্ঠকাঠিন্য তেমন কোন ভয়াবহ রোগ নয় সময় মতো সঠিক চিকিৎসা পেলেই এই কোষ্ঠকাঠিন্য থেকে মুক্তি পাওয়া যায়। কিন্তু, কোষ্ঠকাঠিন্যের লক্ষণ বা সমস্যা যদি বোঝা যায় এবং সময় মতো এর সঠিক চিকিৎসা না করা হয় তবে এই কোষ্ঠকাঠিন্য এক সময় রূপ নিতে পারে ভয়াবহ পাইলস রোগে।

কোষ্ঠকাঠিন্য (Constipation) রোগ সৃষ্টির পেছনে মূল কারণ হলো প্রসাব পায়খানার বেগ চেপে রাখা। কোষ্ঠকাঠিন্য কিন্তু এক দিনে হয়না বরং প্রসাব পায়খানার বেগ আসা সত্ত্বেও বেগ চেপে রাখা এই অভ্যাস অনেকদিন যাবৎ থাকার কারণে কোষ্ঠকাঠিন্য হয়। এটি একটি সাধারণ রোগ হওয়া সত্ত্বেও সময় মত এর চিকিৎসা না হলে কোষ্ঠকাঠিন্য মোকাবেলা করা অনেক চ্যালেঞ্জের একটি বিষয় হয়ে দাড়ায়।

আরো পড়ুনঃগর্ভাবস্থায় তলপেটে ব্যাথা হওয়ার কারণ ও তার প্রতিকার

এই কোষ্ঠকাঠিন্য খুব অল্প সময়ের মধ্যে ভালো না হলে এর থেকে আরও একটি বড় ও মারাত্মক রোগের সৃষ্টি হয় তা হলো পাইলস। পাইলস এমন একটি ব্যাধি যা একবার হলে এর থেকে মুক্তি পাওয়া বেশ মুশকিলই বলা যায়। এই রোগ শুধু অস্বস্থির কারণ নয় বরং রীতিমত অনেক যন্ত্রনাদায়ক ও কষ্টাদায়ক। পাইলস রোগের কারণে আপনার পায়খানার প্রচুর পরিমাণে বেগ আসবে

অথচ টয়লেটে গিয়ে অনেক্ষণ ধরে বসে থেকেও পায়খানা হয় না এবং মলত্যাগের সময় মলদ্বারে অনেক ব্যাথা করে, মলদ্বার বাইরে বের হয়ে আসে। প্রসাব পায়খানার বেগ চেপে রাখার কারণে যেমন কোষ্ঠকাঠিন্য হয়, তেমন কোষ্ঠকাঠিন্য থেকে পাইলস হওয়া সম্ভাবনা ৯৫% বেড়ে যায়। অথবা বংশ পরমপরায় যদি এই রোগ থাকে তাহলেও পাইলস হতে পারে।

তবে যদি কোষ্ঠকাঠিন্য না থাকে তাহলে পাইলস হওয়ার ঝুঁকিও অনেকাংশে কম থাকবে। অতএব আপনার যদি কোষ্ঠকাঠিন্য না থাকে তাহলে আলহামদুলিল্লাহ আরও সতর্ক হয়ে যান। এবং ইতোমধ্যে যদি কোষ্ঠকাঠিন্য থাকে তবে হতাশ হওয়ার কোন কারণ নেই । আল্লাহ তা’আলা যেমন রোগ দিয়েছেন তেমন রোগের সমাধানও দিয়েছেন। তাই কোষ্ঠকাঠিন্য দুর করতে আমি

এমন কিছু গুরুত্বপূর্ণ ৭টি খাবারের নাম বলব যে খাবারগুলো আপনি নিয়মিত গ্রহণ করলে যন্ত্রনাদ্বায়ক কোষ্ঠকাঠিন্য থেকে মুক্তি পেতে পারেন ইনশা-আল্লাহ। তাহলে চলুন এবার জেনে নিই সেই ৭টি খাবার কি কি।

  1. তরমুজ
  2. পালংশাক
  3. পাঁকা কলা
  4. খেজুর
  5. শশা
  6. ডাবের পানি
  7. লালশাক

1.তরমুজঃ তরমুজ সকলের একটি প্রিয় খাবার। কিন্তু অনেকেই জানে না যে তরমুজের মধ্যে কি কি পুষ্টি উপাদান রয়েছে এবং কোন কোন রোগ নিরাময়ের জন্য মহা ঔষধ। তরমুজের প্রায় শতকরা ৯৫% পানি এবং বাকি ৫% অন্যান্য উপাদান বিদ্যামান থাকে। তরমুজে প্রচুর পরিমাণে ফাইবার থাকে আর ফাইবার থাকার কারণে তরমুজ কোষ্ঠকাঠিন্য দূর করতে ব্যাপকভাবে সাহায্য করে।

এমনকি তরমুজের পানিতে প্রচুর পরিমাণে ফাইবার থাকার কারণে লম্বা হতে এবং চোখের দৃষ্টি শক্তি বৃদ্ধি করতে বিশেষ ভূমিকা পালন করে। অতএব সকল রোগ নিরাময়ের ক্ষেত্রে তরমুজ না খেলেই নয়।

2.পালংশাকঃ পালং শাক একটি আঁশ বা ফাইবার জাতীয় খাবার। পালং শাকে ভিটামিন ‘এ’ এবং আঁশের পরিমাণ বেশি থাকায় পালংশাক নিয়মিত খেলে কোষ্ঠকাঠিন্য থেকে মুক্তি পাওয়া যায় এবং ভিটামিন এ থাকায় চোখের সকল সমস্যা ও রাতকানা রোগ হওয়া থেকে রক্ষা করে। তাছাড়া পালংশাকে প্রচুর পরিমাণে ভিটামিন ও পুষ্টি উপাদান রয়েছে।

আরো পড়ুনঃজয়তুন তেলের ৭টি বিশেষ উপকারিতা ও ব্যবহারের নিয়ম

3.পাঁকা কলাঃ পাকা কলা ছোট থেকে শুরু করে বয়জ্যেষ্ঠ পর্যন্ত প্রায় সকলেরই একটি প্রিয় ফল জাতীয় খাবার। নিয়মিত পাকা কলা খাওয়ার মাধ্যমে অনেক রোগ থেকে বাঁচা যায় এমনকি কোষ্ঠকাঠিন্যের মতো যন্ত্রণাদায়ক রোগ থেকে মুক্তি পাওয়া যায়। পাকা কলাতে অন্যান্য পুষ্টি ও ভিটামিনের পাশাপাশি ফাইবার বিদ্যমান থাকায় নিয়মিত পাকা কলা খেলে কোষ্ঠকাঠিন্য থেকে মুক্তি পাওয়া যায়। তাই আপনার প্রতিদিনের খাবারের টাইমলাইনে পাকা কলা রাখুন।

4.খেজুরঃ খেজুরকে অনেক রোগ মুক্তির পাথেই বলা যায়। একটি খেজুরে সকল ধরনের ভিটামিন ও পুষ্টির উপাদানগুলি বিদ্যমান থাকে। এবং খেজুর ফাইবার বা আঁশ জাতীয় এক ধরনের ফল। খেজুর খেলে শারীরিকভাবে স্বাস্থ্যবান লম্বা ও লাবণ্যময়ী হওয়া যায়। এছাড়াও খেজুরে আঁশ বা ফাইবার ব্যাপক পরিমাণে বিদ্যমান থাকায় এটি বিশেষ করে কোষ্ঠকাঠিন্য রোগ দ্রুত নিরাময় করতে সাহায্য করে।

এছাড়াও খেজুরকে একটি জান্নাতি খাবারও বলা হয়। এবং রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম এর প্রিয় খাদ্য তালিকার মধ্যে খেজুর ছিলেন একটি খাবার। তাই কোষ্ঠকাঠিন্য দূর করতে আপনার খাবারের তালিকার মধ্যে ফল হিসেবে খেজুর রেখে দিন।

5.শশাঃ শসা ডায়েটেরি ফাইবার তৈরীর একটি বিশেষ উৎস এবং শসাতে প্রচুর পরিমাণে পানি পাওয়া যায়। তাই শসা খেলে কোষ্ঠকাঠিন্যের মতো অস্বস্তিকর ও যন্ত্রণাদায়ক রোগ দূর হয়। এছাড়াও শসাতে পানির পরিমাণ বেশি থাকায় একজন সুস্থ মানুষ যদি নিয়মিত শসা খেতে পারেন তাহলে অনেক ধরনের রোগ থেকে মুক্তির পাশাপাশি বিশেষ করে কিডনি রোগ থেকে বাঁচতে পারবে।

এবং যারা কিডনি বিকল রোগে ও কিডনিতে পাথর জমে গিয়েছে সেই সকল রোগী যদি প্রতিদিন অন্তত এক থেকে দুইটি শসা খেতে পারেন তাহলে কিডনি সুস্থ হওয়ার পাশাপাশি কিডনিতে জমে থাকা পাথর আস্তে আস্তে গলে প্রসবের স্থান দিয়ে বের হয়ে যায় এবং কিডনি রোগ থেকে মুক্তি পাওয়া যায়। তাই প্রতিটি মানুষেরই প্রতিদিনের খাদ্য তালিকায় শসা না রাখলেই নয়।

6.ডাবের পানিঃ ডাবের পানিতে প্রচুর পরিমাণে ক্যালসিয়াম পটাশিয়াম আয়রন ফাইবার ভিটামিন এ ভিটামিন বি ভিটামিন সি ও অন্যান্য আরো অনেক উপাদান পাওয়া যায়। এবং ডাবের পানি যেহেতু ফাইবার জাতীয় খাবার তাই কোষ্ঠকাঠিন্য দূর করতে ফাইবার বা আঁশ জাতীয় খাবারের কোন বিকল্প নেই।

এবং অধিক পরিমাণে আয়রন থাকায় এ আয়রন রক্তে কোলেস্টেরলের মাত্রা কমিয়ে রক্ত উৎপাদন করতে ব্যাপকভাবে সাহায্য করে ও রক্ত পরিষ্কার করে। তাই আপনার কোষ্ঠকাঠিন্যর রোগ দূর করতে আপনার টাইমলাইনে ডাবকে রেখে দিতে পারেন।

7.লালশাকঃ লাল শাকে যে কি পরিমাণে ভিটামিন ও পুষ্টি রয়েছে তা বলে শেষ করা যাবে না। লালশাকের পাতা এবং ডগায় প্রচুর আঁশ পাওয়া যায় এবং লালশাকের লাল অংশে প্রচুর পরিমাণে ভিটামিন এ ভিটামিন বি ভিটামিন বি২ ভিটামিন সি ভিটামিন ডি ক্যালসিয়াম ও অন্যান্য পুষ্টি উপাদানের সংখ্যা অনেক বেশি পাওয়া যায়। বিশেষ করে আয়রন বেশি পাওয়া যায় যা শরীরের রক্ত উৎপাদন করতে

আরো পড়ুনঃ গর্ভাবস্থায় কি কি ফল ও সবজি খাওয়া যাবে না

সাহায্য করে। তাই লালশাকে যেহেতু আঁশ বা ফাইবারের পরিমাণ বেশি থাকে সেহেতু এটি কোষ্ঠকাঠিন্য দূর করতে অনেকাংশে সাহায্য করে। তাছাড়া লাল শাক সকলের প্রিয় ও সুস্বাদু একটি খাবার। অতএব আপনিও আপনার খাদ্য তালিকায় এই সুস্বাদু খাবার কে যোগ করতে পারেন।

কোষ্ঠকাঠিন্য দূর করার ঘরোয়া উপায়

আপনি কি জানেন ঘরোয়া উপায় অবলম্বনের মাধ্যমে কোষ্ঠকাঠিন্য দূর করা যায়। যদি না জেনে থাকেন তাহলে এই আর্টিকেলের মাধ্যমে কোষ্ঠকাঠিন্য দূর করার ঘরোয়া উপায় গুলি জেনে নিতে পারবেন। সাধারণত আমরা কোষ্ঠকাঠিন্য দূর করার জন্য বিভিন্ন রকম ওষুধ সেবন করে থাকি। অনেকের ওষুধ সেবনের মাধ্যমে কোষ্ঠকাঠিন্য ভালো হয়ে যায় আবার কারো ওষধ ও অনেক ধরনের

কোষ্ঠকাঠিন্য-দুর-করার-ঘরোয়া-উপায়

খাবার গ্রহণের ফলেও কোষ্ঠকাঠিন্য ভালো হয় না। তবে আপনি যদি সেই দলের সারিবদ্ধ একজন রোগী হয়ে থাকেন তাহলে আজকে আমি আপনার উদ্দেশ্যে এমন কিছু ঘরোয়া টিপস তুলে ধরব যেই টিপস গুলি অবলম্বনের মাধ্যমে আপনার কোষ্ঠকাঠিন্যকে চিরতরে বিদায় জানাতে পারবে। তাহলে চলুন আর দেরি না করে জেনে নেই ঘরোয়া টিপস গুলি।

আরো পড়ুনঃ লালশাকের ১৫টি উপকারিতা ও অপকারিতা - গর্ভাবস্থায় লাল শাক খাওয়ার উপকারিতা

  • ঘরোয়া উপায় ১ঃ একটি পান, তিন চাকা পরিমাণ আদা,, একটি দারচিনি, একটি এলাচ, একটি গোলমরিচ, দুইটি লবঙ্গ, ১০ফোঁটা মধু সঙ্গে মিশিয়ে চিবিয়ে খেয়ে নিন। এরপর এক চামচ পরিমাণ ইসুবগুল খাওয়ার পর এক গ্লাস ঠান্ডা পানি পান করুন। এভাবে টানা একমাস খেতে থাকুন দেখবেন ১০ থেকে১২ দিন খাওয়ার পরে অনেকটা আরম বোধ মনে হচ্ছে। আর এভাবে নিয়ম মেনে এক মাস যাবত খেতে পারলে আপনার থেকে কোষ্ঠকাঠিন্য চিরতরে বিদায় নেবে ইনশাআল্লাহ আশা করি।
  • ঘরোয়া উপায় ২ঃ পর্যাপ্ত পরিমাণে দৈনিক পানি পান করুন কারণ পেটের মধ্যে পর্যাপ্ত পরিমাণে পানি থাকলে পেটের সমস্যাগুলি যেমন এসিডিটি এবং খাদ্যনালির ভেতরে খাদ্যকে নরম করে হজম হতে সাহায্য করে যার ফলে মল অতিরিক্ত পাতলা বা কষে যায় না সহজেই বের হয়ে আসে ফলে কোষ্ঠকাঠিন্য হওয়ার ঝুঁকি অনেকাংশেই কম থাকে।
  • ঘরোয়া উপায় ৩ঃ প্রতিদিন পর্যাপ্ত পরিমাণে হাঁটাচলা করা। কারণ হাঁটাচলা করলে পেটের মধ্যে হজম প্রক্রিয়া অনেক সক্রিয় হয় আর হজম প্রক্রিয়া শক্তিশালী হলে কোষ্ঠকাঠিন্য হওয়ার আশঙ্কা অনেকাংশে কম থাকে।
  • ঘরোয়া উপায় ৪ঃ এক গ্লাস পানিতে এক চামচ পরিমাণ ইসুবগুলের ভুষি রাতে ভিজিয়ে রেখে দিন সারারাত ভিজিয়ে রাখার পর সকালে খালি পেটে ইসুবগুলসহ সেই পানি খেয়ে নিন এভাবে বেশ কিছুদিন যাবত ইসুবগুলের পানি পান করলে কোষ্ঠকাঠিন্য থেকে উপশম পাওয়া যায়। তাছাড়া ইসুবগুল কোষ্ঠকাঠিন্য দূর করার একটি বিশেষ ঔষধ।

কোষ্ঠকাঠিন্য দুর করার সিরাপের নাম জেনে নিন

আমরা কোষ্ঠকাঠিন্য নিরাময় করতে বা কোষ্ঠকাঠিন্য থেকে মুক্তি পেতে হোমিওপ্যাথিক, এ্যালোপ্যাথিক কিংবা গাছ গাছড়ার তৈরী বিভিন্ন ধরনের ঔষধ খেয়ে থাকি। যা মোটেও ঠিক নয়। কারণ নানান ধরনের ঔষধ খাওয়ার ফলে এর ব্যাড সাইড ইফেক্ট শরীরে প্রভাব ফেলতে পারে যা কোষ্ঠকাঠিন্যকে ভালো করার পরিবর্তে আরও বাড়িয়ে দিতে পারে। ফলে পাইলস হওয়ার সম্ভাবনা শতাধিক বেড়ে যায়।

আরো পড়ুনঃ পুইশাকের উপকারিতা ও অপকারিতা - পুইশাক খেলে কি এলার্জি হয়

আর একবার যদি পাইলস শরীরে বাসা বাধেঁ তাহলে তা থেকে মুক্তি পাওয়া অনেক কষ্টসাধ্য হয়ে য়ায় এবং শেষমেশ সার্জারির পথকে বেছে নিতে হতে পারে। একটি কথা মনে রাখবেন কোষ্ঠকাঠিন্য এমন কোন মারাত্মক ব্যাধি নয় বিভিন্ন আঁশযুক্ত খাবার গ্রহণের মাধ্যমে অথবা সঠিক ঔষধ সেবন এর মাধ্যমে কোষ্ঠকাঠিন্য ভালো হয়ে যায়। তাই কোষ্ঠকাঠিন্য দেখা দিলে কখনো

আবাল তাবাল ঔষধ না খেয়ে যদি মনে করেন ডাক্তারের পরামর্শ নিব তাহলে সবসময় চেষ্টা করবেন একজন সুদক্ষ ও কোষ্ঠকাঠিন্য বিষয়ে অভিজ্ঞ ডাক্তারের পরামর্শ নেওয়ার। তবে আমি কিছু সিরাপের নাম বলে দিচ্ছি এই সিরাপগুলি কোষ্ঠকাঠিন্যকে দ্রুত নির্মূল করতে সাহায্য করে আপনি তা সেবন করে দেখতে পারেন।

  1. Milk Of Magnesia+
  2. Lactihep Syrup
  3. Dulcolax Syrup
  4. Lactulose Syrup
  5. Dulcolax Bisacodyl Syrup
  6. Senna

এই সিরাপগুলো সেবনের মাধ্যমেও কোষ্ঠকাঠিন্য ভালো করা যায়। কিন্তু নিয়মাবলি পরিমান ও সেবনবিধী মেনে সিরাপগুলি  গ্রহণ করবেন। তবে যাদের পেট ব্যথা ও বমি বমি ভাব মনে হয় তারা কখনো এই সিরাপ গুলি খাবেন না। এবং যারা গর্ভবতী আছেন তারা ডাক্তারের পরামর্শ ছাড়া এই সিরাপগুলি গ্রহণ করা থেকে বিরত থাকবেন।

দ্রুত কোষ্ঠকাঠিন্য দূর করার উপায়

  • কোষ্ঠকাঠিন্য দ্রুত নিরাময় করতে বেশি বেশি তরল পানিও পান করা।
  • প্রতিদিন সকাল বিকাল হাঁটাচলা করা এবং শারীরিক ব্যায়াম করা। তবে কোষ্ঠকাঠিন্য দুর করতে যে সকল ব্যায়াম রয়েছে তা আপনি ইউটিউব বা অন্যন্ন সার্চ ইঞ্জিনে সার্চ করে দেখে নিতে পারেন।
  • বেশি বেশি আঁশযুক্ত খাবার যেমন ছোলা, ডাল, চিনা বাদাম, কাজু বাদাম, মটরশুটি, পালংশাক, নাসপাতি, পাঁকা বা কাঁচা পেপে, আঙ্গুরের জুস, খাওয়া।
  • কিন্তু এই প্রাকৃতিক উপায়গুলো অবলম্বনের মাধ্যমেও যদি কোষ্ঠকাঠিন্য ভালো না হয় এবং আপনার শারীরিক অবস্থা আরো করুন হয়ে পড়ে । সেক্ষেত্রে দেরি না করে দ্রুত একটি ভালো চিকিৎসকের স্বরনাপণ্য হয়ে যায়।

কোষ্ঠকাঠিন্য দুর করার ব্যায়াম

কোষ্ঠকাঠিন্য দ্রুত নিরাময়ের জন্য যে সকল প্রাকৃতিক ও ঘরোয়া উপায়গুলো আছে তা নিয়ে আমরা এই আর্টিকেলে বিস্তারিতভাবে আলোচনা করেছি আশা করি আপনি ভালোভাবে বুঝতে পেরেছেন। তবে আমরাদের মাঝে এখনো অনেক মানুষ আছে যারা জানেনা যে শারীরিক ব্যায়ামের মাধ্যমেও কোষ্ঠকাঠিন্য থেকে কিছুটা হলেও আরাম পাওয়া যায়।

সাধারণত হজম প্রক্রিয়ায় ব্যাহত হলে এবং প্রসাব পায়খানার চাপ ধরে রাখার কারণে স্বাভাবিকভাবে কোষ্ঠকাঠিন্য হতে পারে। তাই হাঁটাহাঁটি করার মাধ্যমে শরীরের হজম ক্ষমতা সচল থাকে এবং প্রসব পায়খানা দ্রুত ক্লিয়ার হতে সাহায্য করে। যার ফলে কোষ্ঠকাঠিন্য হওয়ার সম্ভাবনা কমে যায়।

তাছাড়া সকালে হাঁটাহাঁটি করার মাধ্যমে শরীর স্বাভাবিক ও সুস্থ থাকে এবং অন্যান্য রোগ হওয়ার ঝুঁকি থাকে না। তাই আপনার শরীরকে সুস্থ রাখতে এবং কোষ্ঠকাঠিন্য থেকে মুক্তি পেতে প্রতিদিন সকালে এবং বিকালে কমপক্ষে ৩০ থেকে ৪০ মিনিট মতো হাঁটাহাঁটি করুন।

শরীরকে স্বাস্থ্যবান এবং বিভিন্ন রোগ থেকে মুক্তি লাভের জন্য প্রতিটি অঙ্গ প্রত্যঙ্গের হাজারো রকমের শারীরিক কসরত বা ব্যায়াম রয়েছে যে ব্যায়ামগুলো করার মাধ্যমে শরীর সুস্থ স্বাভাবিক ও সুন্দর থাকে। তবে কোষ্ঠকাঠিন্য দূরীকরণের জন্য অনেক ধরনের ব্যায়াম রয়েছে তা আপনি ইউটিউবে গিয়ে সার্চ করে দেখে নিতে পারবেন।

চিড়া খেলে কি কোষ্ঠকাঠিন্য হয়

অনেকেই প্রশ্ন করে থাকেন এবং প্রশ্নের মাধ্যমে জানতে চান যে চিড়া খেলে কোষ্ঠকাঠিন্য হয় কিনা। আসলে চিড়া খেলে কোষ্ঠকাঠিন্য হয় না যদি তা খাওয়ার পরে পর্যাপ্ত পরিমাণে পানি পান করা হয়। যেহেতু চিড়া একটি শুকনো খাবার তাই চিড়া খাওয়ার পর যথেষ্ট পরিমাণে পানি খেতে হবে। শুধু চিড়া নয় যেকোনো শুকনো খাবার খাওয়ার পর পানি পান করা উচিৎ।

চিড়া-খেলে-কি-কোষ্ঠকাঠিন্য-হয়

কারণ, শুকনো খাবার খাওয়ার পর বেশি পরিমাণে পানি না খেলে সেই খাবার দ্রুত হজম হয়না বরং পেটের মধ্যে হট্রগোল পাকিয়ে ফেলে পরবর্তীতে তা অনেক শুষ্ক ও কষা পায়খানা রূপে বেরিয়ে আসে। অন্যথায় চিড়া আঁশ বা ফাইবার জাতীয় খাবর হওয়ার তা কোষ্ঠকাঠিন্য দুর করতে সাহায্য করে। আপনি চিড়াকে দুধের সঙ্গে অথবা পানিতে ভিজিয়ে খেতে পারেন এতে উপকারিতা বেশ ভালে পাওয়া যায়।

কোষ্ঠকাঠিন্য দুর করার খাবার

কোষ্ঠকাঠিন্য দুর করার খাদ্য তালিকার মধ্যে যে খাবারটি সবচেয়ে বেশি গুরুত্বপূর্ণ তা হল আঁশ বা ফাইবার জাতীয় খাবার আর আঁশ বা ফাইবার জাতীয় খাবারের তালিকায় রয়েছে

  • ফল জাতীয়ঃ মিষ্টি আলু, গাজর, পাঁকা কলা, তরমুজ, কাঁচা বা পাঁকা পেপে, খেজুর, শসা, পেয়ারা, কালো জাম, বাউকুল, আপেল, কমলা, জাম্বুরা, বেদানা, আমলকি, আঙ্গুর, কিসমিস, পাঁকা তাল, চিনা বাদাম, কাঠ বাদাম, কাজু বাদাম।
  • শষ্য জাতীয়ঃ ছোলা, মুগ ডাল, মাশ কালাই, মটরশুটি, অড়হর ডাল, তিসি,
  • শাক জাতীয়ঃ লালশাক, পালংশাক, লাউশাক, কলমিশাক, শুশুনি শাক
  • সবজি জতীয়ঃ শীম, বরবটি, মিষ্টি কুমড়া, লাউ, বাধাঁকপি

কোষ্ঠকাঠিন্য রোধে কিছু সতর্কতা

কোষ্ঠকাঠিন্য দূর করতে আমাদের সকলেরই কিছু সতর্কতা মেনে চলা উচিত। যে সতর্কতা গুলো মেনে চলতে পারলে কোষ্ঠকাঠিন্য ধারে কাছেও ঘেষতে পারবে না। আমাদের অবহেলা এবং কিছু বদ অভ্যাসের কারণে আমাদের শরীরে কোষ্ঠকাঠিন্য হানা দেই। কোষ্ঠকাঠিন্য রোধে সর্তকতা গুলো নিচে দেওয়া হল।

  • প্রতিদিন পর্যাপ্ত পরিমাণে পানি পান করা। একজন সুস্থ ও প্রাপ্তবয়স্ক মানুষের প্রতিদিন কমপক্ষে ৭ থেকে ৯ গ্লাস পরিমান পানি পান করা উচিত তাহলে শরীর সুস্থ থাকবে এবং কোষ্ঠকাঠিন্য দূরে থাকে।
  • প্রতিদিন কমপক্ষে ৩০ থেকে ৪০ মিনিট সকাল এবং বিকাল হাঁটাচলা করা। কেননা হাঁটাচলা করার কারণে শরীরের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধি পায় শরীর সুস্থ ও স্বাভাবিক থাকে। এবং হজম ক্ষমতা বৃদ্ধি পায় ফলের কোষ্ঠকাঠিন্য দূরে থাকে।
  • রাস্তার পাশে বা বিভিন্ন হোটেল রেস্তোরায় ফাস্টফুড জাতীয় খাবার এবং তৈলাক্ত ও ভাজা পড়া খাবার বেশি বেশি না খাওয়া এটি শরীরের জন্য মারাত্মক ক্ষতি করে।
  • বিভিন্ন তরকারির সঙ্গে মসলা জাতীয় খাবার তেল এবং লবণ বেশি বেশি না খাওয়া।
  • বেশি বেশি আঁশ ও ফাইবার জাতীয় খাবার গ্রহণ করা।

শেষ কথা

শেষ কথাই বলতে চাই কোষ্ঠকাঠিন্য দ্রুত নিরাময় করতে গুরুত্বপূর্ণ যে ৭ টি খাবারের নাম বলা হয়েছে এবং যে ঘরোয়া পদ্ধতি গুলো উল্লেখ করা হয়েছে সেই খাবার গুলো খাওয়ার মাধ্যমে কোষ্ঠকাঠিন্যকে দ্রুত নিরাময় করা যায়। তবে কোষ্ঠকাঠিন্য দূরে রাখতে আরও একটি পদ্ধতি হলো যে সতর্কতা গুলো তুলে ধরা হয়েছে সেই সতর্কতাগুলো মেনে চলার মাধ্যমেও কোষ্ঠকাঠিন্য থেকে বাঁচা সম্ভব।

তবে আমি আপনার উদ্দেশ্যে বলি যদি আপনি কোষ্ঠকাঠিন্যে ভোগে থাকেন তাহলে এই আর্টিকেলটিতে দেওয়া তথ্যগুলো অনুস্বরণের মাধ্যমে কোষ্ঠকাঠিন্য থেকে মুক্তি পেতে পারেন। এরপরেও যদি আরামবোধ মনে না হয় তাহলে সে ক্ষেত্রে আপনি ডাক্তারের স্বরণাপন্ন হতে পারেন। আপনি এই আর্টিকেলটির মাধ্যমে যদি কিঞ্চিৎ পরিমাণও উপকৃত হয়ে থাকেন তাহলে

আর্টিকেলটি আপনি আপনার বন্ধুদের সঙ্গে শেয়ার করতে পারেন। এতক্ষণ আমাদের এই আর্টিকেলটি পড়ার জন্য এবং আর্টিকেলের সঙ্গে থাকার জন্য আপনাকে অনেক অনেক 💗ধন্যবাদ।💗

এই পোস্টটি পরিচিতদের সাথে শেয়ার করুন

পূর্বের পোস্ট দেখুন পরবর্তী পোস্ট দেখুন
এই পোস্টে এখনো কেউ মন্তব্য করে নি
মন্তব্য করতে এখানে ক্লিক করুন

গ্রীনল্যান আইটির নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়

comment url